Advertisement
E-Paper

টেস্টের অনুপাতে কোভিড পজিটিভ কেস লাফিয়ে বাড়ছে, উদ্বেগের ছবি রাজ্যে

১০ জুলাই, গোটা দেশে মোট কোভিড-১৯ টেস্টের মধ্যে ৯.৩৪ শতাংশ মানুষের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। এ রাজ্যে তা ১১.২৬ শতাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ২১:৫৯
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

এখনও মহারাষ্ট্র বা দিল্লির মতো পরিস্থিতি হয়নি রাজ্যে। কিন্তু জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা যে ভাবে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে এখানে, তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। গত ২৩ জুনের পর থেকে, এ রাজ্যে কোভিড টেস্টের তুলনায় পজিটিভ কেসের দৈনিক অনুপাতও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। এবং তা দেশের গড় অনুপাতের থেকে বেশি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে রাজ্যের সব কনটেনমেন্ট জোনে নতুন করে কড়াকড়ি চালু হয়েছে। চিকিৎসক মহলের উদ্বেগ, তা দিয়ে পরিস্থিতি সামলানো না গেলে, ভয়ঙ্কর দিকে এগিয়ে যেতে পারে রাজ্যের কোভিড সংক্রমণ।

শুক্রবার, ১০ জুলাই, গোটা দেশে মোট কোভিড-১৯ টেস্টের মধ্যে ৯.৩৪ শতাংশ মানুষের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। এ রাজ্যে তা ১১.২৬ শতাংশ। একমাস আগেও কিন্তু ছবিটা এমন উদ্বেগজনক ছিল না। গত ১০ জুন রাজ্যে কোভিড-১৯ টেস্ট হয়েছিল ৯৫১৯ জনের। তাঁদের মধ্যে ৩.৬ শতাংশের (৩৪৩ জনের) কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। তার পর থেকে ৯ থেকে ১০ হাজারের আশপাশেই প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা হয়েছে রাজ্যে। ২৫ জুনের আগে পর্যন্ত দৈনিক টেস্টের ৫ শতাংশের মধ্যেই মূলত ঘোরাফেরা করছিল পজিটিভ কেসের সংখ্যা।

কিন্তু চিত্রটা বদলে যায় ২৫ জুনের পর। দৈনিক কোভিড-১৯ টেস্টের সংখ্যা খুব একটা বদলায়নি। কিন্তু উদ্বেগজনক ভাবে করোনা পডিটিভের আনুপাতিক হার বেড়ে চলেছে। ২৫ জুন এই হার ছিল ৫ শতাংশ। ২৯ জুন তা চলে যায় সাড়ে ৬ শতাংশের উপরে। ৫ জুলাই ৮ শতাংশের উপর। ৬ জুলাই একটু কমলেও, ৭ জুলাই তা ৮.৪-এ পৌঁছে যায়। ৮ জুলাই ৯.৫।

রাজ্যে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে।

আরও পড়ুন: মল্লিক পরিবারে করোনার হানা, আক্রান্ত রঞ্জিত-কোয়েলরা

৯ জুলাই রাজ্যে নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছিল। টেস্ট হয়েছিল ১০ হাজার ৮০৫ জনের। রাজ্য মৃত্যুতেও রেকর্ড গড়ে। এক দিনে মারা যান ২৭ জন। ওই দিন যেখানে দেশে মোট টেস্টের নিরিখে করোনা আক্রান্তের অনুপাত ছিল ৯ শতাংশ, সেখানে এ রাজ্যে ছিল ১০ শতাংশের উপর।

সেই রেকর্ডও ভেঙে গেল শুক্রবার, ১০ জুলাই। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে— এ দিন টেস্ট হয়েছে ১০ হাজার ৬৩৯ জনের, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১৯৮ জন যা মোট টেস্টের ১১.২৬ শতাংশ। দেশের সার্বিক অনুপাতের তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ বেশি। রাজ্যে এ দিন মৃতের সংথ্যা ২৬জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

কলকাতার পরিস্থিতি এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগের। পিয়ারলেস হাসপাতালের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার এবং চিকিৎসক সুদীপ মিত্র বলেন, “গত এক সপ্তাহের মধ্যে কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। সব থেকে চিন্তার বিষয় হল, আগে যত টেস্ট হত, তার মধ্যে কম সংখ্যায় কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী পাওয়া যেত। এখন কলকাতায় সেই সংখ্যাটা ৫০ শতাংশের কাছাকাছি চলে গিয়েছে।”

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “এক সপ্তাহ আগে ২০০ জনের টেস্ট হলে ২৫ থেকে ৩০ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসত। কিন্তু ৯ জুলাই ২০০ জনের মধ্যে ১০০ জনেরই রিপোর্টই পজিটিভ। এমন হতে থাকলে, তা আগামী দিনে চিকিৎসা পরিষেবায় ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে। বেডের সমস্যা প্রবল হয়ে দেখা যেতে পারে।”

আরও পড়ুন: কোয়রান্টিন সেন্টারে মহিলা শ্রমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পুলিশ, রণক্ষেত্র ঢোলাহাট​

ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক কৌশিক চাকীর কথায়, “গত কয়েক দিনে করোনা আক্রান্তের হার খুবই দুশ্চিন্তার। একে সামলাতে গেলে, এক দিকে যেমন প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে, তেমনই মানুষকে সচেতন হতে হবে। সাধারণ মানুষ গুরুত্বটা না বুঝলে এর থেকে মুক্তি নেই। এটা একটা নতুন ভাইরাস। নানান পরীক্ষা-নিরিক্ষা চলছে। যত দিন না টিকা বেরোয় আমাদের, সতর্ক থাকতে হবে ভীষণ ভাবে।”

তবে এর মধ্যেই, রাজ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও কিন্তু বেড়েছে আগের থেকে। এখন তা ৬০ শতাংশের উপরেই থাকছে। শুক্রবারের বুলেটিনের হিসেবে এই অনুপাত ৬৪ শতাংশ।

Coronavirus in West Bengal Covid 19 Corona Test Covid Test
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy