পিপিই-সহ করোনা চিকিৎসার আনুষঙ্গিক খরচের নামে যথেচ্ছ বিল নয়। কোভিড রোগীদের ফেরানো যাবে না। সর্বোপরি জরুরি বিভাগে আসা অন্য রোগীদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত চিকিৎসা বন্ধ রাখা যাবে না। বৃহস্পতিবার নবান্নের সভাঘরে ৩৩টি বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকে এই ‘মৌখিক নির্দেশ’ দিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম-সহ অন্য আধিকারিকেরাও বৈঠকে ছিলেন।
বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, মানুষের উপর কী ধরনের বোঝা চাপছে, তার আভাস মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই দিয়েছিলেন। মুখ্যসচিবের কথায়, ‘‘২০১৭-য় তৈরি রাজ্যের ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন অনুযায়ী, সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি নিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলি বাধ্য। সরকার কিছু চাপিয়ে দিতে চায় না। কিন্তু আইনে যে রোগী ফেরানোর অবকাশ নেই তা স্মরণ করানো হয়েছে।’’ কোভিড রোগী ফেরানোর প্রবণতা রুখতে বেসরকারি ও সরকারি হাসপাতালে প্রতি দিন কত শয্যা খালি রয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে সেই তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এ-ও জানান, সরকারি ক্ষেত্রে এখন করোনা রোগীদের জন্য ১০ হাজার শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে আট হাজার শয্যা খালি রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ৮০০ শয্যা রয়েছে। তা দু’এক দিনের মধ্যে হাজারে পৌঁছে যাবে। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের একাংশের মতে, এর ফলে কেউ রোগী ফেরালে তৎক্ষণাৎ ধরা পড়বে। তবে দিনভর এই তথ্য ‘আপডেট’ না-করলে এই পদক্ষেপ অর্থহীন।
করোনা চিকিৎসায় মোটা অঙ্কের বিল প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব জানান, বেশ কিছু হাসপাতাল এক জন রোগীর জন্য দিনে সাত-দশটি পিপিই, মাস্ক-সহ অন্যান্য সরঞ্জামের খরচ বিলে যোগ করছে। তাঁর কথায়, ‘‘এখনই সরকার কোনও করোনা প্যাকেজ নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে না। করোনা, লকডাউনের প্রভাবে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অতিমারির চিকিৎসায় ডাক্তার-নার্সদের নিজস্ব সুরক্ষার খরচের একাংশ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বহন করতে হবে। পুরোটাই রোগীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে হবে না।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, বেসরকারি ক্ষেত্রে কোথাও নমুনা পরীক্ষার জন্য ২৮০০ টাকা, কোথাও ৪৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। একই পরীক্ষার জন্য খরচে এমন পার্থক্য কেন, প্রশ্ন মুখ্যসচিবের।