Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coroanvirus

বিদেশ থেকে কলকাতায় ফিরলেই নিভৃতবাস, না গেলে কড়া ব্যবস্থা

প্রশাসনিক কর্তাদের অভিযোগ, কলকাতায় নামার পরে যাত্রীরা জোর করে বাড়ি চলে যেতে পারেন, এ কথা আগাম আঁচ করা যায়নি। তাই দুটি ক্ষেত্রে কার্যত হতভম্ব হয়ে যান তাঁরা।

বিদেশ থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলেই যেতে হবে নিভৃতবাসে। কঠোর রাজ্য প্রশাসন।

বিদেশ থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামলেই যেতে হবে নিভৃতবাসে। কঠোর রাজ্য প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০৫:৩৪
Share: Save:

বিদেশ থেকে কলকাতায় নামার পরে নিয়ম মেনে হোটেলে নিভৃতবাসে না গেলে এ বার কড়া ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার। এমনকি, গত কয়েক দিনে যাঁরা সেই নিভৃতাবাসের নিয়ম না-মেনে বাড়ি চলে গিয়েছেন, তাঁদেরও নোটিস পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

কী ধরনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পুলিশ কর্তারা। বলা হয়েছে, এই বিষয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের দাবি, বিদেশ থেকে ‘বন্দে ভারত’ উড়ানে ওঠার আগে প্রত্যেক যাত্রী যে ফর্ম পূরণ করছেন সেখানে বলা হয়েছে, কলকাতায় নামলে প্রথম সাত দিন হোটেলে ও পরের সাত দিন বাড়িতে থাকতে হবে। হোটেলে নিজেদের খরচে থাকতে হবে। মুচলেখা দিয়ে সেই শর্ত না-মানার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এ ক্ষেত্রে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লাগু করা যাবে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে যাঁরা বিদেশ থেকে এসে বাড়ি চলে গিয়েছেন, তাঁদের খুঁজে বার করে কোয়রান্টিনে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আবু ধাবি থেকে আসা উড়ানের যে সব যাত্রীরা হোটেল-নিভৃতবাসে যেতে রাজি হননি, তাঁদের হুগলির একটি সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ, গত ১৯ জুন কিরঘিজস্তান এবং ২৩ জুন মালয়েশিয়া থেকে আসা শতাধিক যাত্রী নিয়ম না-মেনে বাড়ি চলে যান। মালয়েশিয়া থেকে ফেরা যাত্রী রাজীব বালিদা এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতায় নেমে সাত দিন বাধ্যতামূলক ভাবে হোটেলে থাকতে হবে বলে কোনও ফর্ম পূরণ করেছি কি না মনে নেই। আমার সঙ্গে একজন বয়স্ক যাত্রী হুইল চেয়ারে ছিলেন। তিনি বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন। তাঁকে সাহায্য করার জন্য আমিও অনুমতি পেয়েছি।’’ আর এক যাত্রী ইরানি বসুর অভিযোগ, ‘‘কলকাতায় নামার পরে সাত দিন হোটেলে থাকতে হবে এমন কোনও নির্দিষ্ট তথ্য আমাদেরও দেওয়া হয়নি। সঠিক তথ্যের অভাবে এমনটা হয়েছে।’’ ইরানিদেবী নিজে অবশ্য হোটেলে রয়েছেন।

ওই উড়ানেই কলকাতায় ফেরা রানাঘাটের বাসিন্দা আদিত্য মণ্ডল জানান, তিনি যে ফর্ম পূরণ করেছিলেন, সেখানে উল্লেখ ছিল যে কলকাতায় নামলে সাত দিনের জন্য নিজের খরচে হোটেলে থাকতে হবে। কলকাতায় নামার পরে দেখেন বিমানবন্দরে হোটেলের তালিকা রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি অবশ্য বাড়ি যাব বলে অফিসারদের অনুরোধ করেছিলাম। বলেছিলাম, আমার দাদা ও কাকা এসেছেন। রানাঘাটে নিভৃতবাস রয়েছে। আমি সেখানে গিয়ে থাকব। কিন্তু, ওরা রাজি হননি।’’

প্রশাসনিক কর্তাদের অভিযোগ, কলকাতায় নামার পরে যাত্রীরা জোর করে বাড়ি চলে যেতে পারেন, এ কথা আগাম আঁচ করা যায়নি। তাই দুটি ক্ষেত্রে কার্যত হতভম্ব হয়ে যান তাঁরা। এমনটা হলে কী করা হবে, সে রকম সমান্তরাল কোনও পরিকল্পনাও ছিল না। আশঙ্কা, যাঁরা বিদেশ থেকে এসে জোর করে বাড়ি চলে গেলেন, তাঁদের মধ্যে কারও যদি সংক্রমণ থাকে, তা হলে তা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই, এ বার নিভৃতবাসের নিয়ম কড়া হাতে পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন নবান্নের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE