Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ আভাস যদি নতুন কোনও ভোরের হয়, দিনটাও ভাল যাবে

সদর্থক। বলতেই হচ্ছে। বিষয়টা সদর্থক নয়। কিন্তু পদক্ষেপটা অবশ্যই। এক জন জনপ্রতিনিধি অবৈধ উপায়ে অর্থোপার্জন করবেন, জনসাধারণের নাভিশ্বাস তুলে দেবেন, আরও স্পষ্ট করে বললে— নির্লজ্জ তোলাবাজি করবেন, এই রকম বিষয়কে সদর্থক বলা যায় না কোনও উপায়েই।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০৪:২৮
Share: Save:

সদর্থক। বলতেই হচ্ছে।

বিষয়টা সদর্থক নয়। কিন্তু পদক্ষেপটা অবশ্যই।

এক জন জনপ্রতিনিধি অবৈধ উপায়ে অর্থোপার্জন করবেন, জনসাধারণের নাভিশ্বাস তুলে দেবেন, আরও স্পষ্ট করে বললে— নির্লজ্জ তোলাবাজি করবেন, এই রকম বিষয়কে সদর্থক বলা যায় না কোনও উপায়েই। কিন্তু এর নিবারণকল্পে যে পদক্ষেপ গৃহীত হল, তাকে স্বাগত জানাতেই হচ্ছে।

বিধাননগর পুর নিগমের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। তোলাবাজির অভিযোগ জমা পড়েছিল তাঁর নামে। বস্তুত, অনেক দিন ধরেই এমন নানা অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে স্তূপীকৃত হচ্ছিল। তার মাঝেই এক হিংসা-ক্লান্ত পৌর নির্বাচনে জয়লাভ করে কাউন্সিলর পদ ধরে রেখেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই আরও বেপরোয়া হয়ে জনসাধারণের জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতাকে বিপন্ন করে তুলছিলেন নিজের ওয়ার্ডে। রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কক্ষে পৌঁছে গিয়েছিল খবরটা। মঙ্গলবার সকালে খাঁড়াটা নেমে এল। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জোড়াফুল প্রতীকের হয়ে লড়ে কাউন্সিলর হয়েছেন কি না, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাল না পুলিশ। কারণ নির্দেশটা সে রকমই ছিল।

এই উল্লেখযোগ্য গ্রেফতারির খবরে কিন্তু রাজ্যে খানিকটা হইচই লক্ষ্য করা গিয়েছে। শাসক দলের মনোনয়নে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তো দূরের কথা, শাসক দলের কোনও সাধারণ কর্মীর কেশাগ্র স্পর্শ করার আগেও পুলিশকে দশ বার বা আরও বেশি বার ভাবতে হত গত পাঁচটা বছরে। এ বার কিন্তু ভাবতে হল না। প্রথমে থানায় দীর্ঘ জেরা, তার পর গ্রেফতারি ঘোষণা। শেষে আদালত ঘুরিয়ে শাসক দলের কাউন্সিলরকে আপাতত সপ্তাহদু’য়েকের জন্য কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া। মসৃণ ভাবে মিটে গেল সব। কোনও শাসক নেতার হুমকি নেই, কোনও বিক্ষোভ নেই, সরকারের উপরমহলের কোনও উষ্মা নেই। বরং প্রচ্ছন্ন নির্দেশ রয়েছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার।

রাজধর্ম এমনই হওয়া বাঞ্ছনীয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম দফার মুখ্যমন্ত্রিত্বে এই ছবি খুব একটা দেখা যায়নি। কিন্তু অনেকেই বলছেন, দ্বিতীয় দফাটা একটু অন্য ভাবে শুরু হয়েছে। কাউন্সিলরের গ্রেফতারিও সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।

তা হলে কি কোনও নতুন ভোর? যদি তা-ই হয়, সে ক্ষেত্রে বলতে হচ্ছে, এ ভোরের আলো বেশ স্নিগ্ধ। সত্যিই যদি এ কোনও নতুন ভোরের নিশান হয়, তা হলে দিনটাও বাংলার মানুষ স্বস্তিতেই কাটাবেন। রাতে নিশ্চিন্তে নিদ্রাও যাবেন। অপেক্ষা রইল— সেই দিনের, সেই রাতের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE