বাতিল নোট বদলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ উঠল কলকাতার কয়েকটি ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে।
আয়কর আইনজীবীদের দাবি, ওই কর্মীরা ২৫% কাটমানির বিনিময়ে পিছনের দরজা দিয়ে কিছু কারবারির কাছ থেকে পুরনো নোট নিয়ে গোছা গোছা নয়া নোট ধরিয়ে দিচ্ছেন। আর হাপিত্যেশ করে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বৈধ গ্রাহককে ফিরতে হচ্ছে ‘নো ক্যাশ’ নোটিশ দেখে। শনিবার এক আলোচনাসভায় আয়করের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশন) প্রিয়ব্রত প্রামাণিককে এই অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
শনিবারের আয়কর আইনজীবী নারায়ণ জৈন অভিযোগ করেন, ‘‘কিছু ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ২৫% কাটমানির বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকার পুরনো নোট বদলে নতুন নোট দিচ্ছেন। এক শ্রেণির লোক সেই টাকা নিয়ে ব্যবসা ফেঁদেছে।’’
নারায়ণবাবুর আরও অভিযোগ, শহরের বেশ কিছু ‘এন্ট্রি অপারেটর’ বা মধ্যস্থতাকারী সংস্থা বাজারে নেমে পড়েছে। তারা কেবল কাগজকলমে অস্তিত্ব রয়েছে এমন কিছু সংস্থার অ্যাকাউন্টে পুরনো টাকা ঢুকিয়ে কালো টাকা সাদা করার খেলায় নেমেছে। আয়কর দফতর এদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না তা জানতে চান নারায়ণবাবু।
আয়কর কর্তা প্রিয়ব্রত প্রামাণিক জানান, শহরের সব ‘এন্ট্রি অপারেটরের’ কাজের উপরে ইলেকট্রনিক নজরদারি চালানো হচ্ছে। তাঁরা কোথা থেকে টাকা আনছেন, কোথায় ঢালছেন সবই নজরে থাকছে। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের কাজকর্মেও আয়কর দফতরের নজর রয়েছে বলে জানান তিনি। কোনও ব্যাঙ্কের কাজকর্মে সন্দেহ হলে সরাসরি আয়কর দফতরে ফোন করে অভিযোগ করতে অনুরোধ করেন ওই কর্তা। তাঁর আশ্বাস, অভিযোগ পাওয়া মাত্র রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ সব ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেবে। আয়কর কর্তা জানান, ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত লেনদেনের হিসেব সব ব্যাঙ্ক ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আয়কর দফতরে পাঠাবে। আয়কর দফতর তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে। জনধন অ্যাকাউন্ট বা অন্যের তহবিলে টাকা ঢালা, সোনা কেনা বা সম্পত্তি কেনার যাবতীয় তথ্যও আয়কর দফতর খতিয়ে দেখবে।
প্রিয়ব্রতবাবু জানান, ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে নয়া বেনামি সম্পত্তি আইন। এই আইনে কেউ বেনামি সম্পত্তি রাখলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। সেই সঙ্গে যে ব্যক্তি অন্যের হয়ে বেনামি সম্পত্তি রাখবেন তিনিও আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
একই সঙ্গে আয়কর কর্তার আশ্বাস, এই সময়ে তহবিলে জমা পড়া টাকার উৎস জানিয়ে দিলে এবং তার উপর কর দেওয়া থাকলে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তা না হলে আয়কর দফতরের নজরদারি প্রক্রিয়া জারি থাকবে। এই তল্লাট থেকে বিদেশের কোনও ব্যাঙ্কে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকার লেনদেন হলেও তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy