সূর্ষকান্তের পথ আটকে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: কিংশুক আইচ।
খাসতালুকেই বাধা পেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। বুথে বুথে বামেদের যে জাঠা কর্মসূচি শুরু হয়েছে, শুক্রবার তা বেরিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে। নিজের বিধানসভা এলাকায় সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সূর্যবাবু নিজে। তবে মিছিল কিছুটা এগোনোর পরেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা পথ আটকান। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুর নেতৃত্বে অবশ্য বাধা সরিয়ে এগিয়ে চলে মিছিল।
এ দিন সকালে নারায়ণগড় থানার নারমা থেকে মিছিল শুরু হয়। গোড়ায় কোনও অশান্তিই ছিল না। মিছিল শুরুর আগে কোতাইগড়ে আদিবাসী মহিলারা বিরোধী দলনেতাকে ফুল দিয়ে, বাজি পুড়িয়ে বরণ করে নেন। মিছিলের গন্তব্য ছিল পাঁচ কিলোমিটার দূরে মদনমোহনচক। মিছিল শেষে সেখানেই পথসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় নারমা থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে কালীতলা মোড়ের কাছে। সেখান সকাল থেকে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শক্তিপদ দে-র নেতৃত্বে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা জমায়েত করেছিলেন। মাইকে মিছিল বিরোধী প্রচার ছিল। মিছিল ওই এলাকায় এলে জনা পঞ্চাশেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পথ আটকান। কিন্তু সূর্যবাবুরা পিছু হঠেননি। রীতিমতো ঠেলে বাধা সরিয়ে দেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। মিছিলে প্রায় আড়াইশো মানুষ ছিলেন। ফলে, জনা পঞ্চাশেকের অবরোধ বড় বাধা হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি সামলে যায়। তবে ধস্তাধস্তির সময় পায়ে চোট পান সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়। যদিও আঘাত গুরুতর নয়।
সূর্যবাবুর কনভয়ে আসা জনা চারেক কনস্টেবল এবং নিজস্ব দেহরক্ষী ছাড়া আর কোনও পুলিশ অবশ্য এ দিন ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। নারায়ণগড় থানা থেকে চার জন সিভিক ভলান্টিয়ার মিছিলের সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। তবে ধস্তাধস্তির সময় তাদের কাউকেই দেখা যায়নি। সূর্যবাবুকে ব্যারিকেড সরিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন তাঁর দেহরক্ষীরাই।
মিছিল শেষে মদনমোহনচকে পূর্ব নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ীই সভা হয়। সেখানে বুক ঠুকে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘জীবন বাজি রাখছি। আক্রমণ যত হবে প্রতিরোধের মাত্রা তত বাড়বে।’’ রাস্তায় নেমেই যে আন্দোলন হবে তা-ও স্পষ্ট করে দেন তিনি। একই সঙ্গে দলের কর্মীদের তাঁরা পরামর্শ, ‘‘মাথা ঠান্ডা করে বাড়ি ফিরে যান। তবে তার মানে এই নয় যে আক্রমণ হলে প্রতিরোধ করবেন না।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই ঘটনার দায় নিতে নারাজ। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের দাবি, ‘‘ওখানে আমাদের দলের কেউ ছিলেন না। পাশে স্কুল থাকা সত্ত্বেও সিপিএম মিছিল-সভা করায় স্থানীয় অভিভাবকরাই বাধা দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy