সঙ্কটের কালে পুরনো সেই দিনের কায়দাতেই ফিরে যাচ্ছে সিপিএম!
শিল্প চাই, কাজ চাই— এই স্লোগানকে সামনে রেখে চলতি মাসের শেষেই সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযান হবে সিপিএমের কৃষক সভা ও খেতমজুর সংগঠনের উদ্যোগে। রাজ্যের বেশির ভাগ জেলা থেকে দলের প্রায় সব গণসংগঠনই ওই পদযাত্রায় যোগ দেবে। দু’দিনের পদযাত্রায় রাতের বিরতি হবে হাওড়ার বালিতে। ঠিক হয়েছে, বালির বাড়িতে বাড়িতে রাত কাটাবেন পদযাত্রীরা। এক এক জনের রাতের ও পর দিন সকালের জলখাবারের ভার এক একটি পরিবারকে নিতে আর্জি জানানো হয়েছে। সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, রাতে বালিতে প্রায় আড়াই হাজার পদযাত্রী থেকে যাবেন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি চালানো হচ্ছে।
মহল্লায় মহল্লায় গিয়ে নানা জনের বাড়িতে রাত কাটিয়ে এক কালে পার্টি গড়েছিলেন কমিউনিস্ট নেতারা। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় এ রাজ্যে দলের কর্মীদের সেই রেওয়াজ উঠেই গিয়েছিল। এখন কঠিন সময়ে পুরনো কৌশলকেই বাছা হচ্ছে। সিপিএমের সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পর্যন্ত এ বারের অভিযানের উদ্দেশ্য মূলত দু’টো। এক, লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করা। দুই, বিজেপির রথযাত্রা এবং তৃণমূলের পাল্টা যাত্রা ঘিরে মেরুকরণের বাতাবরণ তীব্র হওয়ার সময়ে নিজেদের পৃথক অস্তিত্ব প্রমাণ করা।
মহারাষ্ট্রের ‘কিসান লং মার্চে’র আদলেই এ বারের পদযাত্রা। মহারাষ্ট্রে কৃষকেরা অবশ্য ১৮০ কিলোমিটার হেঁটেছিলেন। সিঙ্গুর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার পথ দু’দিনে পেরোবেন পদযাত্রীরা। তিন বছর আগে শিল্পের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে শালবনি পদযাত্রার সূচনা করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এখন আর তাঁর পক্ষে সিঙ্গুর যাওয়া সম্ভব নয়। কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক ও সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য হান্নান মোল্লা ২৮ নভেম্বর সিঙ্গুরে পদযাত্রা শুরু করবেন।
পরের দিন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশে থাকবেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়ায় রবিবারই কনভেনশন করে প্রস্তুতি বুঝিয়ে আসেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও খেতমজুর সংগঠনের নেতা অমিয় পাত্রের বক্তব্য, ‘‘পদযাত্রীদের রাতে থাকার ব্যবস্থার জন্য বালিতে আমরা প্রচার চালিয়েছি। দলের কর্মী-সমর্থকেরা তো বটেই, আরও কিছু গণতন্ত্রপ্রিয় পরিবার এক জন করে লোককে বাড়িতে থাকতে দিতে রাজি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পদযাত্রায় পুলিশও সম্মতি দিয়েছে। তবে পুলিশের আর্জি মেনেই লেনের এক দিক ছেড়ে রেখে আমরা হাঁটব।’’ বালিতে রাত কাটিয়ে পর দিন পদযাত্রা শহরে ঢুকবে হাওড়া সেতু পেরিয়ে। হাওড়া, হুগলির কর্মীদের সে দিন বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে। বালি থেকে আসা পদযাত্রার সঙ্গে বাকিরা হাওড়া স্টেশনে যোগ দেবেন। আর দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের লোকজন শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিল করে রানি রাসমণি যাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy