Advertisement
E-Paper

কংগ্রেস-সিপিএম বোঝাপড়া যেন ‘দ্বিতীয় শিলিগুড়ি মডেল’

অতীতে কয়েকটি এলাকায় সমবায় সমিতি, স্কুলের পরিচালন সমিতির ভোটে দেখা গিয়েছিল শাসক-বিরোধী অলিখিত জোট। এ বার কয়েক ধাপ এগিয়ে খানিকটা বৃহত্তর ক্ষেত্র, অর্থাৎ পুরসভাতেও তৃণমূলকে হারাতে খোলাখুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করতে দেখা গেল সিপিএমকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ২০:৩৮

অতীতে কয়েকটি এলাকায় সমবায় সমিতি, স্কুলের পরিচালন সমিতির ভোটে দেখা গিয়েছিল শাসক-বিরোধী অলিখিত জোট। এ বার কয়েক ধাপ এগিয়ে খানিকটা বৃহত্তর ক্ষেত্র, অর্থাৎ পুরসভাতেও তৃণমূলকে হারাতে খোলাখুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করতে দেখা গেল সিপিএমকে। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরসভার বরো চেয়ারম্যান নির্বাচনে এমন ঘটনাই ঘটেছে। যেখানে ১০ আসনবিশিষ্ট ৩ নম্বর বরোতে তৃণমূল ও বামেদের চারটি করে আসন রয়েছে। মাত্র দু’জন কাউন্সিলর হলেন কংগ্রেসের। অথচ ভোটাভুটিতে তৃণমূল প্রার্থীকে ৬-৪ ভোটে হারিয়ে কংগ্রেসের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক চেয়ারম্যান পদ দখল করেছেন।

বছর ছ’য়েক আগে শিলিগুড়িতে বামেদের সমর্থনে তৃণমূলের মেয়র পদপ্রার্থী গৌতম দেবকে হারিয়ে কংগ্রেস বোর্ড গড়েছিল। দু’মাস আগেই নির্দলকে সঙ্গে নিয়ে পুরবোর্ড গড়েছে বামেরা। সদ্যসমাপ্ত বাজেট অধিবেশনে কংগ্রেস কাউন্সিলররা সংশোধন সাপেক্ষে পুরবাজেটকে সমর্থন করেছেন। ফলে, রাজ্য রাজনীতিতে আগামী দিনে ‘দ্বিতীয় শিলিগুড়ি মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। শিলিগুড়ির মেয়র তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘পুরসভার বরোর ভোটাভুটিতে ফ্লোর ম্যানেজমেন্ট করতে হয়। এটা কোনও নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা নয়। তবে এটা জোর গলায় বলতে পারি, রাজ্যের যেখানে তৃণমূলকে হারানোর ন্যূনতম সুযোগ মিলবে সেখানেই তার সদ্ব্যবহার করব। রাজ্যের স্বার্থেই তৃণমূল বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ সব দলকে সমন্বয় করতে হবে।’’ তৃণমূলের তরফে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া: ‘‘এটা অনৈতিক আঁতাত। আমাদের দলনেত্রী যে হযবরল-র কথা বলেছিলেন তার সূচনা শিলিগুড়ি থেকে হল।’’

পক্ষান্তরে, তৃণমূল-বিজেপি বোঝাপড়ার অভিযোগও উঠেছে একটি বরোর ভোটে। ১০ আসনবিশি‌ষ্ট দু’নম্বর বরোয় তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৫টি, সিপিএমের ২টি, কংগ্রেস, বিজেপি ও নি‌র্দলের দখলে রয়েছে একটি করে। সেখানে তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থী দিলেও সিপিএম দেয়নি। বিজেপি কাউন্সিলর পুরসভার হাজির হলেও ভোটে যোগ দেননি। ভোটাভুটিতে ৫-৪ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জিতেছেন। এর পরেই কংগ্রেসের সদ্যনির্বাচিত বরো চেয়ারম্যান সুজয়বাবুর মন্তব্য: ‘‘আমরা বাম ও তৃণমূল থেকে সমদূরত্বের নীতির কথা মাথায় রেখে প্রার্থী দিয়েছি। বামেরা আমাদের সমর্থন করেছেন। উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।’’ তাঁর কটাক্ষ: ‘‘কিন্তু, ২ নম্বর বরোয় বিজেপি ভোটাভুটি থেকে সরে গিয়ে তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়া অনেক কিছু সামনে এসেছে। যেমন, সারদা-কাণ্ড কেন ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে তা কিছুটা বোঝা যাচ্ছে। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে ময়দান ছাড়ার যে ইঙ্গিত দিয়েছে বিজেপি তারও প্রতিফলন যেন দেখা গেল শিলিগুড়ির বরো চেয়ারম্যান ভোটে।’’

৪৭ আসনের শিলিগুড়ি পুরসভায় ৫টি বরো রয়েছে। মোট আসনের মধ্যে বামেরা ২৩, তৃণমূল ১৭, কংগ্রেস ৪, বিজেপি ২ ও নির্দল ১টি। কাউন্সিলরের সংখ্যার হিসেবে বাম এবং তৃণমূল উভয়েরই একটি করে বরো দখল নিশ্চিত ছিল। বাকি তিনটি বরো কার দখলে যাবে তা নিয়েই যাবতীয় জল্পনা, সমীকরণ চলছিল। ১ নম্বর বরোতে বামেদের ছাড়া অন্য কোনও দলের প্রার্থী ছিল না। তবে বিজেপি-র জেলা সভাপতি রথীন বসু বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের পাশে দাঁড়াইনি। সে জন্যই তো আমাদের কাউন্সিলর ভোটে যোগ দেননি।’’ তাতে তৃণমূলের সুবিধে হল বলে মনে করছে কংগ্রেস। রথীনবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কী হলে কী হতে পারত এ সব প্রশ্নের জবাব দেব না।’’

CPM congress siliguri Trinamool Gautam deb municipal election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy