Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

বারুইপুরে সীমান্ত টপকে রোহিঙ্গার ঢল

মঙ্গলবার গভীর রাতে বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে আরও ৮০ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছেছেন বারুইপুরে। এর আগেও রোহিঙ্গারা নদীপথে সীমান্ত পেরিয়ে তিন দফায় এসে ঘাঁটি গেড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের হাড়দহ গ্রামে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
বারুইপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৫
Share: Save:

মঙ্গলবার গভীর রাতে বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে আরও ৮০ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছেছেন বারুইপুরে। এর আগেও রোহিঙ্গারা নদীপথে সীমান্ত পেরিয়ে তিন দফায় এসে ঘাঁটি গেড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের হাড়দহ গ্রামে। কলকাতা থেকে ৫০ কিমি দূরে সেখানে অস্থায়ী শিবির খুলে তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছে ‘দেশ বাঁচাও সামাজিক কমিটি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

প্রসঙ্গত, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিয়ে দিল্লির নীতি হল, ধরো এবং সীমান্তের ওপারে পাঠাও।

বারুইপুর এলাকায় গিয়ে পাওয়া খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে জলপথে সন্দেশখালি হয়ে রোহিঙ্গাদের এ রাজ্যে প্রবেশ করানো হচ্ছে। গত ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফ থেকে হাড়দহের শিবিরে প্রথম দফায় ২৯ জন রোহিঙ্গাকে আনা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২২ জন এসেছেন। তৃতীয় পর্যায়ে ৫৩ জন এসেছেন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি। ১০ মার্চ পাঁচজন এসেছেন। আর সবচেয়ে বড় দলটি এসেছে মঙ্গলবার রাতে।

যা শুনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন,‘‘বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। পুলিশ সুপারকে রিপোর্ট দিতে বলেছি।’’ কী ভাবে সীমান্ত টপকে আসছেন রোহিঙ্গারা? বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের আইজি অঞ্জনইয়েলু বলেন,‘‘আমরা সতর্ক আছি। সীমান্ত টপকালে আমরা তা খোঁজখবর করছি।’’ এর আগেও ২০ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়ার পর তাঁদের পুশব্যাক করা হয়েছে বলে বিএসএফ সূত্রের দাবি।

Advertisement

যদিও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক হোসেন গাজি জানিয়েছেন, ‘‘কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে আমাদের অফিস রয়েছে। সেখান থেকেই মায়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের এখানে আনা হচ্ছে। টিন, বাঁশের ছাউনি দিয়ে আপাতত থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্বাস্তুদের মধ্যে মহিলা ও শিশুর সংখ্যা বেশি। ২২টি পরিবারের ১০৯ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাঁরা আসবেন তাঁদেরও করা হবে। ’’

কিন্তু এত টাকা-পয়সা আসছে কোথা থেকে? হাড়দহ শিবিরের পরিচালক হোসেন গাজির কথায়, ‘‘৪০টির বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একজোট হয়ে এই বড় দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও
সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে।’’

তবে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা রোহিঙ্গা প্রশ্নে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছেন। বারুইপুর ব্লকের বিডিও সৌম্য ঘোষের কথায়, ‘‘স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে রোহিঙ্গারা বারুইপুরের শিবিরে মাস তিনেক আগে এসেছেন বলে শুনেছি। ওঁদের বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র মণ্ডলের কথায়, ‘‘হাড়দহে রোহিঙ্গারা এসেছে, শুনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’’

হাড়দহের শিবির দেখে শতাধিক রোহিঙ্গার দেখা মিললেও পুলিশের হিসেবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সংখ্যার মাত্র ২৬। বারুইপুরের এসডিপিও অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দিন কুড়ি আগে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, ওখানে ২৬ জন রোহিঙ্গা সদস্য রয়েছেন।’’ বারুইপুরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কাছে ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস’ স্বীকৃত একটি পরিচয়পত্র রয়েছে। বারুইপুরের এসডিপিও-র কথায়, ‘‘হাড়দহে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র আসল কিনা তা খতিয়ে দেখতে দিল্লির অফিসে ওই পরিচয়পত্রের নমুনা পাঠানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.