Advertisement
০৩ মে ২০২৪
ছাপাখানাকে দোষারোপ

বাংলা অনার্সে প্রশ্ন-বিভ্রাট, পরীক্ষা স্থগিত

বাংলা অনার্স পার্ট টু-তে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছ’হাজার। এ দিন বেশ কিছু কলেজে নির্দিষ্ট সময়ে প্রশ্নপত্র বিলির পরেই পরীক্ষার্থীরা দেখেন, প্রশ্নপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় চতুর্থ পত্র কথাটি লেখা আছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

পরীক্ষা ছিল বাংলা অনার্স (পার্ট টু) চতুর্থ পত্রের। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছল তৃতীয় পত্রের প্রশ্ন!

সোমবার এই বিভ্রাটের পরেই ওই পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করে দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এই পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩০ জুন পাশ কোর্সের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনার কোনও নজির মনে করতে পারছে না শিক্ষাজগৎ। এমন ঘটনায় ছাত্রছাত্রীরা বেজায় ক্ষুব্ধ। কেন এই বিভ্রাট, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছেন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ।

বাংলা অনার্স পার্ট টু-তে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছ’হাজার। এ দিন বেশ কিছু কলেজে নির্দিষ্ট সময়ে প্রশ্নপত্র বিলির পরেই পরীক্ষার্থীরা দেখেন, প্রশ্নপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় চতুর্থ পত্র কথাটি লেখা আছে। কিন্তু ভিতরে রয়েছে তৃতীয় পত্রের বহু প্রশ্ন। খবর যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছু ক্ষণের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।

সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেনও স্বীকার করেন, এই ঘটনা নজিরবিহীন। তৃতীয় পত্রের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রশ্ন ছিল ওই প্রশ্নপত্রে। এই বিভ্রাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানাতেই ঘটেছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার পরেই তদন্ত কমিটি গড়ার পাশাপাশি উপাচার্য ছাপাখানার সুপারিন্টেন্ডেন্ট অপরেশ দে-কে ডেকে পাঠান। অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন। তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে। কমিটি তদন্ত চালিয়ে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। রেজিস্ট্রার এ দিন বলেন, ‘‘এমন কাণ্ড কে বা কারা করেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। যে বা যারা এই কাণ্ডের জন্য দায়ী, তারা অবশ্যই শাস্তির মুখে পড়বে।’’

আরও পড়ুন: রাজ্যে কি ৫৫০ ভুয়ো চিকিৎসক!

তীব্র গরমে এ দিন পরীক্ষার হলে পৌঁছেও এই প্রশ্ন-বিভ্রাটে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে না-পারায় ছাত্রছাত্রীরা ক্ষুব্ধ। বেশ কয়েকটি কলেজের কিছু পরীক্ষার্থী সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের সামলাতে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং পরীক্ষা নিয়ামককে দফতর ছেড়ে নেমে আসতে হয়।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় জানান, তাঁর কলেজে প্রশ্নপত্র পেয়ে অনেকে লিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু একটু পরেই বোঝা যায়, তৃতীয় পত্রের অনেক প্রশ্ন ঢুকে গিয়েছে চতুর্থ পত্রের প্রশ্নের মধ্যে। ‘‘আমরা সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিষয়টি জানাই। ওখান থেকে কিছু ক্ষণের মধ্যে পরীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশ আসে,’’ বলেন পঙ্কজবাবু।

বেশ কিছু কলেজের প্রশ্নপত্রে অবশ্য কোনও ভুল বা অসঙ্গতি ছিল না। বড়িষা বিবেকানন্দ মহিলা কলেজে নির্ভুল প্রশ্নপত্র গিয়েছিল। অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও পরীক্ষা স্থগিত রাখার নোটিস আসে। পরীক্ষার্থীদের তা জানাতে অনেকে কেঁদে ফেলেন।’’

সোমাদেবীর অভিযোগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানা বিভাগের কাছ থেকে বিশেষ সহযোগিতা মেলে না। কয়েক দিন আগেই ভূগোলের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩৯ জন। কিন্তু প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছিল মাত্র ১৭টি। ছাপাখানা বিভাগের কাছে বারবার চেয়েও বাকি প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE