—ফাইল চিত্র।
নিম্ন থেকে উচ্চ, সব আদালতেই মামলার পর মামলা জমছে। সাইবার মামলার ক্ষেত্রেও ছবিটা আলাদা নয়। বরং আরও খারাপ। যদিও সাইবার অপরাধ বেড়েই চলেছে।
কোথাও বকেয়া সাইবার মামলার হার ৯৩ বা ৯৬%, কোথাও আবার ১০০% মামলাই বিচারের আশায় রয়েছে! ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি)-র সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য বলছে, দেশের ব়ড় শহরগুলিতে সাইবার মামলার বিচারের হাল এমনটাই। কলকাতায় প্রায় ৮৮% মামলা বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন?
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, আদালতে অন্যান্য মামলায় দাঁড়ানোর জন্য কৌঁসুলির অভাব নেই। কিন্তু সাইবারের মতো প্রযুক্তিভিত্তিক মামলায় লড়াই করার উপযুক্ত আইনজীবী কম। এ রাজ্যে সরকার পক্ষের সাইবার মামলা লড়ার জন্য বিভাস চট্টোপাধ্যায় নামে এক জন বিশেষ কৌঁসুলি রয়েছেন। রাজ্যের যে-কোনও প্রান্তে সরকারের মামলা লড়তে তিনিই ভরসা। আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, সাইবার অপরাধ যে-হারে বাড়ছে, তাতে আরও সরকারি বিশেষজ্ঞ কৌঁসুলি প্রয়োজন। একটি সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকার এই বিশেষ কৌঁসুলির তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু সেই আপাতত কাজ স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, এই পরিস্থিতি গোটা দেশেই। তবু এ রাজ্যে এক জন বিশেষ কৌঁসুলিকে নিয়োগ করা হয়েছে। দিল্লি-সহ বহু রাজ্যে তা-ও নেই। তার ফলে এই সব মামলার ঠিকমতো শুনানি হয় না। বহু ক্ষেত্রে মামলা জমে থাকে। পূর্ব মেদিনীপুরে এক মহিলার আত্মহত্যার মামলা আটকে রয়েছে। বিপিও কেলেঙ্কারি-সহ আরও কিছু মামলায় দ্রুত বিচারের প্রয়োজন বলে মনে করছেন পুলিশ ও আইনজীবীদের একাংশ।
পুলিশ অফিসারেরাও বলছেন, শুধু নির্ভেজাল সাইবার অপরাধ নয়, এখন খুন, চুরি, ডাকাতি বা দুর্নীতির মামলাতেও সাইবার আইনের ব্যবহার হচ্ছে। সল্টলেকের একটি খুন বা নিউ টাউনে আইনজীবী রজত দে-র খুনের ঘটনাতেও সাইবার কৌঁসুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নারদ মামলার ক্ষেত্রেও বাদী-বিবাদী পক্ষের সওয়াল-জবাবে সাইবার প্রযুক্তির খুঁটিনাটি উঠে এসেছিল। ফলে এই বিষয়ে পারদর্শী আইনজীবীর সংখ্যা না-বাড়লে আগামী দিনে বকেয়া মামলার সংখ্যা যেমন বা়ড়বে, তেমনই সরকারের তরফে দুর্বল সওয়ালের ফাঁক গলে নিস্তার পেয়ে যেতে পারেন অপরাধীরাও। সাইবার মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের দাবি, প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে এখনও কিছু মামলায় সরকার পক্ষের তরফে জোরালো সওয়াল হচ্ছে না। তার ফলে অপরাধীরা সুবিধা পাচ্ছে।
তবে সাইবার মামলার বিশেষ কৌঁসুলি বিভাসবাবুর দাবি, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ুর তুলনায় এ রাজ্যে অনেক বেশি সাইবার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কলকাতায় এক মহিলা বিচারককে হুমকি ও উত্ত্যক্ত করা, মেদিনীপুরে ব্ল্যাকমেলের জেরে তরুণীর মৃত্যু-সহ বিভিন্ন ঘটনায় অপরাধীরা সাজাও পেয়েছে। এমনকি সাইবার অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালেও নিষ্পত্তি হয়েছে একটি মামলার। যা সারা দেশের মধ্যেই বিরল ঘটনা। তাঁর দাবি, কিছু ক্ষেত্রে ফরেন্সিক রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় শুনানি আটকে থাকছে। তা না-হলে আরও মামলার নিষ্পত্তি হতে পারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy