Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Dengue

মুখে ‘ডেঙ্গি’ বলেও, কারণ লেখা অন্যই

দেগঙ্গার নুরনগর পঞ্চায়েতের খেজুরডাঙার কর্মকারপাড়ার গঙ্গা কর্মকারের (৪৭) মৃত্যুতে উঠল এমনই অভিযোগ। বেড়াচাঁপার আব্দুল ওহাবের (৫৮) ক্ষেত্রেও একই দাবি পরিবারের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দেগঙ্গা ও বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:২২
Share: Save:

ডাক্তারবাবু মুখে বললেন, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর শংসাপত্রে নথিভুক্ত থাকল, মৃত্যুর কারণ ‘সেপ্টিসিমিয়া।’

দেগঙ্গার নুরনগর পঞ্চায়েতের খেজুরডাঙার কর্মকারপাড়ার গঙ্গা কর্মকারের (৪৭) মৃত্যুতে উঠল এমনই অভিযোগ। বেড়াচাঁপার আব্দুল ওহাবের (৫৮) ক্ষেত্রেও একই দাবি পরিবারের।

জ্বর গায়ে বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গঙ্গাকে। শুক্রবার রক্ত পরীক্ষা হয়। খিঁচুনি হচ্ছিল। পেট ফুলছিল। সোমবার বারাসত হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকরে। সেখানেই মারা যান গঙ্গা।

তাঁর স্বামী রণজিৎ বলেন, ‘‘স্ত্রীকে স্ট্রেচারে চাপিয়ে এ ঘর ও ঘর কত ঘুরলাম। কিন্তু সে ভাবে চিকিৎসাই শুরু হল না। ডাক্তারবাবু মুখে বললেন, ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছে স্ত্রী। কিন্তু লিখে দিল সেপ্টিসিমিয়া।’’ তাঁর আরও দাবি, কেন ডেঙ্গি লিখলেন না, এই প্রশ্ন করায়, ডাক্তারবাবু সাফ বলে দেন, ‘‘নিষেধ আছে।’’

দেগঙ্গার গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি দিনই লাফ দিয়ে দিয়ে বাড়ছে। ডেঙ্গির ঘটনা চাপার চেষ্টা করছে প্রশাসন, এমন অভিযোগ উঠছে বার বার। কিন্তু সরকার বরাবরই জানিয়ে আসছে, তথ্য গোপনের প্রশ্নই উঠছে না। বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের যাদবপুর গাইনপাড়ার আব্দুল ওহাব জ্বরে আক্রান্ত হন শুক্রবার। পর দিন হাড়োয়ার এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। সোমবার পেট ফুলতে থাকে। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, প্রবল ঘাম। বন্ধ হয়ে যায় প্রস্রাব-পায়খানা।

সোম ও মঙ্গলবার জ্বরে ভুগে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বসিরহাট মহকুমায়। রবিবার মারা গিয়েছেন বসিরহাটের নিমদাঁড়িয়ে-কোদালিয়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা রেজিনা বিবি (২৫)। সেনাকর্মী রফিকুল মণ্ডলের স্ত্রী রেজিনাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতার নার্সিংহোম, হাসপাতালেও চিকিৎসা চলে। রবিবার বাড়িতে আনার পরে মারা যান ওই মহিলা।

বাদুড়িয়ার মাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা মনিহার বিবি (২২) সোমবার সন্ধ্যায় দমদমের একটি নার্সিংহোমে মারা যান। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রুদ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে তাঁর রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়ে।

হাড়োয়ার খাসবালান্দা পঞ্চায়েতের গাবতলা গ্রামের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সপ্তমী মাহালি (১৩) কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। শুক্রবার হাড়োয়া হাসপাতালের পথে তার মৃত্যু হয়। দক্ষিণ আদমপুরের ফুলজান বিবি (৪৫) ও অনিতা অধিকারী, হাড়োয়ার উত্তর বরদা গ্রামের সুনীল শীল (৫২) জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন বাড়িতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Fever Medical
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE