দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার শহর থেকে কলকাতা এবং এই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় কয়েকশো বাস নিয়মিত যাতায়াত করে। কিন্তু ডায়মন্ড হারবারে কোনও স্থায়ী বাস টার্মিনাস তৈরি হল না এখনও। ফলে বাস রাখতে একদিকে যেমন সমস্যায় পড়েন বাস কর্মীরা, অন্য দিকে বাস ধরতে এসে নাকাল হতে হয় যাত্রীদের।
ডায়মন্ড হারবার শহর থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা। ৩০-৩৫টি বাস চলাচল করে এই রুটে। কিন্তু মহকুমা সদর ডায়মন্ড হারবারে বাস টার্মিনাস না থাকায় বাসগুলি দাঁড়িয়ে থাকে কলেজ রোডের পাশে। রাস্তায় যানজট হয়। অন্য দিকে, ডায়মন্ড হারবার থেকে মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর ও ধর্মতলায় যাতায়াত করে এসডি-১৮ রুটের বাস। শহরের আশেপাশে কোনও বাস রাখার জায়গা না থাকায় প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে একটি স্ট্যান্ডে বাস রাখতে হয়। এ ছাড়াও, ডায়মন্ড হারবার শহরের উপর দিয়ে চলে কাকদ্বীপ ও গঙ্গাধরপুর থেকে ধর্মতলা রুটের এসডি-১৯ বাস। এসটিএ বাসটিও চলে নামখানা থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। এ ছাড়াও রয়েছে পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা থেকে এসডি-১১ রুটের মিনি বাস। যেটি রামনগরের নুরপুর পর্যন্ত এবং পাথরপ্রতিমা বাজার থেকে রায়চক পর্যন্ত চলে। মন্দিরবাজারের বিজয়গঞ্জবাজার থেকে ফলতার নতুন রাস্তার মোড় ও বুডুল থেকে কুলপির রাধানগর বাজার পর্যন্ত মিনি বাস চলাচল করে। ওই রুটগুলির সমস্ত বাসই ডায়মন্ড হারবার রুট দিয়েই যাতায়াত করে। বাস টার্মিনাস গড়ে না ওঠায় বাসগুলি ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে অথবা কোনও পেট্রোল পাম্পের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখতে হয়। নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড না থাকায় বাসকর্মীদের খাওয়া-থাকার জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁদের বক্তব্য, “বাস টার্মিনাস হলে রাতে স্ট্যান্ডে ফিরে খাওয়া ও থাকা নিশ্চিত হতে পারে। কারণ টার্মিনাসের মধ্যে থাকার ও খাওয়ার হোটেলের ব্যবস্থা থাকবে। এমনকী, বাথরুমের ব্যবস্থাও থাকবে।” এম-১০ রুটের একজন বাস কর্মচারী বাপি শেখের অভিযোগ “আমার বাড়ি রায়দিঘি এলাকায়। যে দিন ডায়মন্ড হারবারে শেষ বাস নিয়ে ফিরি, সে দিন আর বাড়ি যেতে পারি না। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় বাসের মধ্যেই রাত কাটাতে হয়।”
অন্য দিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদেরও এই বাসটার্মিনাসের অভাবে প্রচুর সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তাঁদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ওঠানামা করা যায় না বলে ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠতে হয়। কলকাতাগামী বাসের জন্য স্ট্যান্ড করা গেলেও জায়গার অভাবে রায়দিঘি, নামখানাগামী কোনও বাসস্ট্যান্ড করা যায়নি। খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বাসের পথ চেয়ে। চওড়া রাস্তা না হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজটে নাজেহাল হন যাত্রীরা। সমস্যা রয়েছে পানীয় জল ও শৌচাগারেরও।
এত দিনেও বাস টার্মিনাস তৈরি হল না কেন?
ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান পান্নালাল হালদার বলেন, “মহকুমা হাসপাতালের কাছে জাতীয় সড়কের ধারে ২ একর পুকুর ও জমি রয়েছে। ওই জায়গায় বাস টার্মিনাস করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই জমি নিতে গেলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি দরকার। সেই মতো ওই জমি নেওয়ার জন্যে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy