Advertisement
E-Paper

উদ্বোধনের পরেও থমকে জল-প্রকল্প, ভোগান্তি

প্রতিটি রাস্তার মোড়ে দাঁড় করানো একটি করে বড় ট্যাঙ্ক। তার সামনে সার দেওয়া বালতি। কে আগে পানীয় জল নেওয়ার সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে চলছে লড়াইও। গরম পড়তে না পড়তেই গত চার দিন ধরে এমনই ছবি চোখে পড়ছে বালি পুর-এলাকায়। দিন পনেরো আগেই ঢাকঢোল পিটিয়ে বালি পুর-এলাকায় ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৩:৪১

প্রতিটি রাস্তার মোড়ে দাঁড় করানো একটি করে বড় ট্যাঙ্ক। তার সামনে সার দেওয়া বালতি। কে আগে পানীয় জল নেওয়ার সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে চলছে লড়াইও। গরম পড়তে না পড়তেই গত চার দিন ধরে এমনই ছবি চোখে পড়ছে বালি পুর-এলাকায়।

দিন পনেরো আগেই ঢাকঢোল পিটিয়ে বালি পুর-এলাকায় ২৪ ঘণ্টা জল সরবরাহের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তার পরেই দীর্ঘ দিনের জলকষ্টে ভোগা ৩৫টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, সমস্যা বুঝি মিটল। কিন্তু টানা চার দিন ধরে জল না পাওয়ায় বেজায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, ‘‘জল প্রকল্পের কাজ চলছে বলে এত বছর ধরে বালির পানীয় জলের সমস্যাকে ধামাচাপা দেওয়া হত। কিন্তু প্রকল্পের উদ্বোধনের পরেও এই সমস্যা কেন?’’

পুরসভা সূত্রে খবর, ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৩৮৪৯.৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেএমডিএ-র তৈরি জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু হতে এখনও ঢের দেরি। এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্য উচ্চ জলাধারে ও অন্যত্র যে পাইপ সংযোগ করার কথা, এখনও শেষ হয়নি সেই কাজ। তাই রোজ ৪ লক্ষ ৮০ হাজার লিটার জল সরবরাহের কথা থাকলেও এক ফোঁটাও মিলছে না জেএনএনইউআরএম-এর প্রকল্প থেকে।

সব কাজ সম্পূর্ণ না করে এ ভাবে প্রকল্প উদ্বোধন হল কেন? বালি পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএম-এর অরুণাভ লাহিড়ী বলেন, ‘‘যাঁরা উদ্বোধন করেছেন, উত্তর তাঁরাই দিতে পারবেন। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলছেন, ‘‘জল প্রকল্প তৈরির পরে চালু করতে এক মাস মতো সময় লাগে। ওখানে কী অবস্থা তা খোঁজ নেব।’’

কাজ শেষ না করেই প্রকল্প উদ্বোধন করে দেওয়ার মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন বালি পুরসভার ক্ষমতায় থাকা সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু যে পুরনো পদ্ধতিতে বালি এত দিন জল পেয়েছে, সেই শ্রীরামপুর প্রকল্পের জলও চার দিন ধরে আসছে না কেন? অরুণাভবাবু এ জন্য প্রযুক্তিগত ত্রুটিকেই দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় শ্রীরামপুর প্রকল্পে জল তুলতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে তা মিটে গিয়েছে।’’ এ দিকে, তৃণমূল এর পিছনে সিপিএম পরিচালিত পুরসভার চক্রান্ত রয়েছে বলেই মনে করছে। কিন্তু ফিরহাদ বলেন, ‘‘প্রকল্প উদ্বোধনের পরে বালিতে শ্রীরামপুরের জল আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তা চালু করতে বলেছি।’’

যাই হোক, গত রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বেজায় ভোগান্তি হয়েছে বালি পুর-এলাকার বাসিন্দাদের। দিনে তিন বার জল আসার কথা থাকলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে জল এসেছে মাত্র এক-দু’বার। বাড়িতে জলের সংযোগ থাকলেও রাস্তার কলে এসে লাইন দিতে হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে মঙ্গলবার থেকে প্রতিটি এলাকায় পুরসভার জলের গাড়ি পাঠাতে হয়েছে। এ দিন পুরসভা পরিচালিত হাসপাতাল কেদারনাথ মাতৃসদনেও জল শেষ হয়ে গেলে জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে সমস্যা মেটাতে হয়।

তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, চার দিন ধরে যে পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হবে, তা নিয়ে আগাম কোনও ঘোষণাও করেননি পুর-কর্তৃপক্ষ। আচমকা এই ঘটনায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। এক দিকে বহু পুরনো শ্রীরামপুর প্রকল্পে প্রযুক্তিগত সমস্যা, অন্য দিকে শেষ হয়নি নতুন তৈরি হওয়া প্রকল্পের কাজ। কবে এর সুরাহা হবে, এ নিয়েই এখন আশঙ্কায় রয়েছেন বালির বাসিন্দারা।

water supply , kmda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy