একশো দিনের কাজ এবং ‘টোটাল স্যানিটেশন ক্যাম্পেন’ প্রকল্পের সমন্বয়ে নির্মল ভারত অভিযানের ‘স্বাস্থ্যসম্মত পারিবারিক শৌচাগার’ তৈরি শুরু হল হাওড়ায়। জেলায় দু’লক্ষ বাড়িতে ওই শৌচাগার নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
উদয়নারায়ণপুর ব্লকের হাত ধরেই হাওড়ায় এই শৌচাগার হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ওই ব্লকের কানুপাট-মনসুকা ও দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত জেলার মধ্যে প্রথম স্বাস্থ্যসম্মত পারিবারিক শৌচাগার তৈরি করছে। দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথম পর্যায়ে ১০০টি করে ২০০টি বাড়িতে এই শৌচাগার করছে। তবে, এই ব্লকের ৮ হাজারেরও বেশি শৌচাগার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে। উদয়নারায়ণপুর ব্লক ছাড়া জেলার অন্যত্র ওই শৌচাগার তৈরির প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে জব কার্ড থাকার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি জেলার শহুরে ব্লকে এই প্রকল্প দ্রুত রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হাওড়া জেলায় টার্গেট রয়েছে ২ লক্ষ বাড়ি।
নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পকে আরও ত্বরান্বিত করার জন্য ২০১১-র শেষ দিকে ‘টোটাল স্যানিটেশন ক্যাম্পেন’ (টিএসসি) প্রকল্পের সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের টাকা জুড়ে দেয়। এবং উপভোক্তার ন্যূনতম আর্থিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে ১০,৯০০ টাকায় বাড়ি বাড়ি উন্নত মানের শৌচালয় তৈরির প্রকল্প নেয় কেন্দ্র। ঠিক হয়, এসটিসি দেবে ৪৫০০ টাকা, উপভোক্তা দেবে মাত্র ৯০০ টাকা। পরে বাজারদর অনুযায়ী এসটিসি এবং এনআরইজিএ (১০০ দিনের কাজ)-র টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়। নদিয়াকে মডেল করে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে সব জেলাকে প্রকল্প রূপায়ণের নির্দেশ দেয়। টিএসসি প্রকল্পের শৌচালয় যারা আগে পেয়েছে তাদের বাদ রাখার কথা বলা হয়। তবে এই স্বাস্থ্যসম্মত পারিবারিক শৌচালয় প্রকল্পে বিপিএল ছাড়াও এপিএল-এর ৪টি বিভাগের লোকদের এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় সরকার। সেক্ষেত্রে বলা হয়, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ও আশা-কর্মীরা বেস লাইন সার্ভে করবে। সার্ভেতে দেখা যায় হাওড়ায় ২ লক্ষ বাড়িতে শৌচালয় নেই। সেই সব বাড়িতে ওই শৌচালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ ক্ষেত্রে শৌচাগার তৈরির কাজ দেখাশোনা ও শৌচাগার তৈরিতে অনিচ্ছুকদের বোঝানোর জন্যও স্বচ্ছতা দূতকর্মী নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু হাওড়ায় উদয়নারায়ণপুর ব্লক শুধু সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জেলার কাছে আবেদন পাঠায় স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করার জন্য। অন্য ১৩টি ব্লকে এখনও আবেদন জানানো হয়নি। অনেক ব্লকে স্বচ্ছতা কর্মীও নিয়োগ করা হয়নি। যদিও ২ লক্ষ শৌচালয় তৈরির জন্য এনআরইজিএ এবং টিএসসি জেলায় অনেক টাকা পাঠিয়েছে। উদয়নারায়ণপুর ব্লকের আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ৭০ লক্ষ টাকাও পাঠিয়েছে। সেখানে দুটি পঞ্চায়েতে কাজ চলছে বলে জেলার তরফে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রকল্পে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে জবকার্ড থাকা বাঞ্ছনীয় হওয়ায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ডোমজুড়, পাঁচলা, সাঁকরাইল, বাগনান, উলুবেড়িয়া প্রভৃতি ব্লক শহুরে ব্লকে পরিণত হয়েছে। সেখানে ১০০ দিনের কাজে ব্লকগুলি পিছিয়ে রয়েছে। ফলে কর্মী সমস্যা হবে, প্রকল্পের গতি কমবে। তবে সে সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলে দাবি জেলা নির্মল ভারত অভিযানের কো-অর্ডিনেটর তপন চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, “আমরা বিডিও-দের নির্দেশ দিয়েছি এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। এ ছাড়া, অন্যান্য ব্লকও কাজ করছে। আশা করছি শীঘ্রই সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy