Advertisement
০২ মে ২০২৪

প্রতারণা, গ্রেফতার যুবক

বোকা বানিয়ে টাকা হাতানোর জারিজুরি বেশি দিন টিকল না। শেষ পর্যন্ত হাওড়া সিটি পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ল বছর পঁয়ত্রিশের দৃষ্টিহীন যুবক এস আর রাধাকৃষ্ণন ওরফে চন্দন সিংহ ওরফে শেখর নায়েক। ধৃতের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে চার লক্ষ চুরাশি হাজার টাকা ও পাঁচটি মোবাইল।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

বোকা বানিয়ে টাকা হাতানোর জারিজুরি বেশি দিন টিকল না। শেষ পর্যন্ত হাওড়া সিটি পুলিশের হাতে বমাল ধরা পড়ল বছর পঁয়ত্রিশের দৃষ্টিহীন যুবক এস আর রাধাকৃষ্ণন ওরফে চন্দন সিংহ ওরফে শেখর নায়েক। ধৃতের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে চার লক্ষ চুরাশি হাজার টাকা ও পাঁচটি মোবাইল।

পুলিশ জানিয়েছে, আদতে কর্নাটকের বাসিন্দা চন্দন মাস কয়েক আগে হাওড়ার শিবপুরের রামমোহন মুখার্জি রোডের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া আসে। এলাকায় সে নিজেকে ভারতীয় দৃষ্টিহীন ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসাবে পরিচয় দেয়। পাশাপাশি প্রচার করে, তার সঙ্গে ক্রীড়া ও রাজনীতির জগতের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশের ধারণা, এই মিথ্যা পরিচয়ের সুবাদে ,সে শীঘ্রই আশপাশের বাসিন্দাদের আস্থা অর্জন করে ফেলে।

পুলিশ জানায়, পাশের ফ্ল্যাটের এক চিকিত্‌সক দম্পতির সঙ্গে এ ভাবে ভাব জমায় ওই যুবক। অভিযোগ, নিজের দৃষ্টিহীনতাকে কাজে লাগিয়ে ওই দম্পতিরও সহানুভূতিও আদায় করে চন্দন। গত এপ্রিলে একাদশ শ্রেণিতে ওই দম্পতির ছেলে খারাপ ফল করলে তাঁরা চন্দনের সাহায্য চান ছেলেকে অন্য স্কুলে ভর্তি করতে। পুলিশ জানায়, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছেলেকে ভর্তি করে দেবে বলে ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চন্দন। পরের দিন সকালেই দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায় সে। এর পরেই ওই দম্পতি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, ২৬ মে খবর আসে চন্দন মধ্য হাওড়ার একটি ব্যাঙ্কের সামনে ঘোরাঘুরি করছে। এর পরেই পুলিশ বাহিনী গিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই চিকিত্‌সক দম্পতির থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে চন্দন আশ্রয় নেয় কলকাতার যোধপুর পার্কের কাছে এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, সেখানে থাকার সময় এক দিন সাউথ সিটি মলে এক মহিলার সঙ্গে যেচে আলাপ করে তাঁর সঙ্গেও মা-ছেলের সম্পর্ক তৈরি করে সে। সম্পর্ক গড়ায় বাড়ি পর্যন্ত। একই উপায়ে বিভিন্ন নামী ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বলে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর আস্থা অর্জন করে সে। এর পর এক বহুজাতিক জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থার ফ্রাঞ্চাইজি জোগাড় করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের থেকে পাঁচ লক্ষ সাত হাজার টাকা আদায় করে হাওড়ায় পালিয়ে আসে।

পুলিশ জেনেছে, হাওড়ায় থাকাকালীন এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে সোনার হার জমা রেখে চন্দন ২৬ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল, ধার শোধ করে হার নিয়ে রাঁচি চলে যাবে। এ জন্য বিমানের টিকিটও কেটে রেখেছিল সে।

হাওড়ার এডিসি (সাউথ) জয়িতা বসু বলেন, “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। তা মঞ্জুর হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কলকাতা হাওড়া ছাড়াও মুম্বই, শিলিগুড়িতেও একই ভাবে লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতি করেছে চন্দন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fraud arrest debashis das
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE