Advertisement
E-Paper

পরিস্রুত পানীয় জলের প্রতীক্ষা

পুরসভার বয়স প্রায় দেড়শো ছুঁই ছুঁই। অথচ পুর এলাকার বেশিরভাগ বাড়ির বাসিন্দাই এখনও নাগরিক পরিষেবার প্রধান সুবিধা অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এত বছর পরেও যদি পানীয় জলের সুবিধাটুকুও না পাওয়া যায়, তা হলে পুরসভার বাসিন্দা হওয়ার অর্থ কী! পাশাপাশি যে সব পরিবার বর্তমানে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়িতে পানীয় জলের সুবিধা পান, অনিয়মিত সরবরাহ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে তাঁদেরও।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৪ ০০:৫০
হাপিত্যেশ। —নিজস্ব চিত্র।

হাপিত্যেশ। —নিজস্ব চিত্র।

পুরসভার বয়স প্রায় দেড়শো ছুঁই ছুঁই। অথচ পুর এলাকার বেশিরভাগ বাড়ির বাসিন্দাই এখনও নাগরিক পরিষেবার প্রধান সুবিধা অর্থাৎ বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এত বছর পরেও যদি পানীয় জলের সুবিধাটুকুও না পাওয়া যায়, তা হলে পুরসভার বাসিন্দা হওয়ার অর্থ কী! পাশাপাশি যে সব পরিবার বর্তমানে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়িতে পানীয় জলের সুবিধা পান, অনিয়মিত সরবরাহ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে তাঁদেরও। এলাকাটি আর্সেনিকপ্রবণ। বাসিন্দাদের অধিকাংশই কলের জল পানীয় হিসেবে ব্যবহার করেন। এই অবস্থায় ওই জল পানের উপযুক্ত কি না সে প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে।

কী বলছেন উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম প্রাচীন গোবরডাঙা পুরসভার কর্তৃপক্ষ?

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৮৭০ সালে এই পুরসভা তৈরি হয়। আশির দশকে পুর এলাকায় জল সরবরাহের জন্য প্রথম পাইপ লাইন বসানো হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তার পর প্রকল্পের কাজ আর বিশেষ এগোয়নি। পুর এলাকায় ১৪ হাজার পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৮৫০টি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। বিভিন্ন সময়ে এই পুরসভায় কখনও ডান কখনও বামেরা দু’পক্ষই ক্ষমতায় থেকেছে। ২০১০ সালে পুর নির্বাচনের আগে বামশাসিত পুরবোর্ড কিছু বাড়িতে জলের সংযোগ দেয়। এর পর পুর নির্বাচনে হেরে যায় বামেরা। ক্ষমতায় এসে তৃণমূল আরও কিছু বাড়িতে জলের সরবরাহের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। পুর এলাকায় মোট জলের যে চাহিদা তাতে ওই সামান্য কিছু সংযোগে জলের সমস্যা মেটানো যায়নি। এই অবস্থায় পানীয় জলের সংযোগ না পেয়ে বহু বাসিন্দাই ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিপিএমের বাপি ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা বাড়িতে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কাজটা শুরু করেছিলাম। এই এলাকা আর্সেনিকপ্রবণ। তাই এলাকার মানুষের মধ্যে জলের সংযোগ নেওয়ার চাহিদাও আছে। আরও বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান পুরবোর্ডের উদ্যোগের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিনের পাইপ লাইন সম্প্রসারণ এবং মেরামতিও হয়নি। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সামর্থ্য আছে এমন কিছু পরিবার জল কিনে খাচ্ছেন। গোবরডাঙা শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে শিয়ালদহ-বনগাঁ রেললাইন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রেললাইনের দু’দিকে পিএইচই-র অতি গভীর দু’টি নলকূপ রয়েছে।

সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হয়। বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের জন্য দুটি রিজার্ভার রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুভাষ দত্ত পানীয় জলের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, “পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে সম্প্রতি একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন প্রকল্পে গঙ্গার জল পরিস্রুত হয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে। নৈহাটি থেকে ওই জল আসবে। ৩৭ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার কেন্দ্র ও রাজ্যের ওই যৌথ প্রকল্পের কাজ দু’বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। সমীক্ষার কাজ শেষ। ১৬ মে ভোটের ফল ঘোষণার পর টেন্ডার ডাকা হবে।”

তবে এ সব সত্ত্বেও পুর এলাকার সমস্ত বাড়িতে কবে জলের সংযোগ দেওয়া হবে, সে দিকেই এখন তাকিয়ে পুরবাসী।

simanta moitra bangaon pure drinking water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy