Advertisement
১০ মে ২০২৪

বিধায়কদের নেতৃত্বে কমিটি গড়ে প্রচারে জোর তৃণমূলের

জনতার দরবারে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলছেন, আড়াই বছরে তিনি এলাকার উন্নয়নে কী কাজ করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ শোনাচ্ছেন, তাঁর ভূমিকার কথা। তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন, গ্রামোন্নয়নে তাঁর কাজের ফিরিস্তি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০২:২৪
Share: Save:

জনতার দরবারে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলছেন, আড়াই বছরে তিনি এলাকার উন্নয়নে কী কাজ করেছেন।

পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ শোনাচ্ছেন, তাঁর ভূমিকার কথা।

তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন, গ্রামোন্নয়নে তাঁর কাজের ফিরিস্তি।

দলীয় প্রার্থী সুলতান আহমেদের জন্য উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দলীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সদস্যদেরও সামিল করেছে রাজ্যের শাসক দল। এর জন্য সংশ্লিষ্ট বিধায়কের নেতৃত্বে গড়া হয়েছে কমিটি। বিধায়কেরা আবার তাঁর নীচের স্তরে কমিটি গড়েছেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত প্রধান এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের সামনে রেখে। বিধায়কদের মতে, এতে সুবিধাই হচ্ছে তাঁদের।

সুলতান নিজেও কাজের ফিরিস্তি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। নির্বাচনের কাজে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের জড়িয়ে দেওয়ার মূল পরিকল্পনাটি তাঁরই। সুলতান বলেন, “উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা যুক্ত। প্রত্যেকের ভূমিকা নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলে। তাই নির্বাচনী কমিটি গড়ার সময়ে বিধায়ক থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের প্রধান বা সদস্যকেও সামিল করা হয়েছে।”

উলুবেড়িয়া উত্তর, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, উলুবেড়িয়া পূর্ব, শ্যামপুর, বাগনান, আমতা এবং উদয়নারায়ণপুর এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে উলুবেড়িয়া লোকসভা আসন। এর মধ্যে আমতা ছাড়া বাকি ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে তৃণমূলের হাতে। আমতা কেন্দ্রটি রয়েছে কংগ্রেসের হাতে। জেলা তৃণমূল নেতারা মনে করছেন, ছয় বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সদস্যেরা যে ভাবে প্রচার শুরু করেছেন, তাতে একদিকে যেমন তাঁদের নিজেদের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, অন্য দিকে, তাঁদের আন্তরিক প্রচারে লোকসভায় দলীয় প্রার্থীর ঝুলি সমৃদ্ধ হবে। তা ছাড়া, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও সুবিধা হবে।

উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা ইতিমধ্যেই সুলতানের জন্য প্রচারের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। তৈরি করেছেন তিনটি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। তাতে রাখা হয়েছে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের। সমীরবাবুর এলাকায় বুথের সংখ্যা ২৬০টি। ৩২টি বুথে তিনি ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থীর চেয়ে কম ভোট পেয়েছিলেন। সেই সব বুথে কর্মাধ্যক্ষ, প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। মানুষের ক্ষোভ জানার চেষ্টা করছেন। সমীরবাবুর কথায়, “সাংসদ বা আমি যেমন নির্বাচিত প্রতিনিধি, কর্মাধ্যক্ষ বা প্রধানেরাও তাই। আমরা চাই সকলেই উন্নয়নমূলক কাজ মানুষের সামনে তুলে ধরুন। তা ছাড়া, আড়াই বছর পরে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আমার কোথায় খামতি তা জেনে নিতে হবে না? প্রতিপক্ষ যতই দুর্বল হোক। আমি কোথাও ফাঁক রাখতে চাই না।”

বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বা উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায়েরা যে সব নির্বাচন কমিটি গড়েছেন তাতে দলীয় নেতারা যতটা আছেন তার চেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, সভাপতি বা পঞ্চায়েতের প্রধানরা। অরুণাভবাবু বলেন, “সাংসদকে নিয়ে আমরা তো বুথে বুথে যাচ্ছিই। তার সঙ্গে ৩৪ মাসে আমার কী ভূমিকা ছিল, বা ছ’মাসে পঞ্চায়েত কী কাজ করেছে সেটাও জানাচ্ছি।”

পুলকবাবু বলেন, “কোথাও কোথাও দলের কিছু সাংগঠনিক সমস্যাও থেকে যাচ্ছে। সেখানেও আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। উন্নয়নমূলক কাজই আমাদের প্রধান হাতিয়ার।” প্রায় একই বক্তব্য অন্য বিধায়কদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

election campaign uluberia nurul absar tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE