ফল এতটা ভাল হবে তা তিনিও আশা করেননি। তবে ফল যে তাঁর অনুকূলে যাবে তা শুক্রবার গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তখনও গণনা শেষ হয়নি। দুপুর নাগাদ নিজের হাওড়ার বাড়িতে বসে প্রসূনবাবু জানালেন, “আমি গতবারের উপনির্বাচনে যে ভোট পেয়েছিলাম এ বার তার চেয়ে থেকে অনেক বেশি ভোটে জয় লাভ করছি।” তাঁর এই প্রত্যয়ের উদাহরণ পাওয়া গিয়েছিল কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। গণনায় নিকটবর্তী সিপিএম প্রার্থী শ্রীদীপ ভট্টাচার্যের থেকে ক্রমাগত লিড বাড়িয়ে চলেছিলেন তিনি। সন্ধ্যায় ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তার নিকটতম প্রার্থী শ্রীদীপ ভট্টাচার্যকে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেছেন।
এ দিন সকাল থেকেই হাওড়া সদরের ভোট গণনা কেন্দ্র ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের পরিবেশ ছিল যথেষ্টই শান্ত। বহুদূর থেকেই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে কোনও দলের সমর্থক বা সাধারণ মানুষ গণনা কেন্দ্রের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেননি। গোটা স্টেডিয়াম চত্বর ছিল কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে বাঁধা। যে কারণে অন্য বারের তুলনায় এ বার গণনা কেন্দ্র ছিল অনেকটাই শান্ত।
এ দিন সকাল ৮টায় সাদা রঙের পাজামা পাঞ্জাবি পরে হাসি মুখে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী জর্জ বেকারকে। ক্রমশ রোদের তাপে ফর্সা মুখ লাল হয়ে গেলেও হাসি লেগেই ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসি উধাও হয়ে যায়। হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র। তার প্রত্যেকটিতেই তৃণমূল প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে ছাপিয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে যেতে থাকে।
জর্জ বেকারের মতো এদিন গণনা কেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী মনোজ পাণ্ডেও। তবে দুপুরের পরে তাঁকে আর দেখা যায়নি। তবে গণনা কেন্দ্রের ধারে কাছেও ঘেঁষেননি শ্রীদীপবাবু। গণনা শেষ হওয়ার মুখে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ গণনা কেন্দ্রে চলে আসেন প্রসূন। ততক্ষণ তাঁর অপেক্ষায় ঠায় বসেছিলেন হাওড়া জেলার (শহর) তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায়। প্রসূনবাবু আসতেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অরূপবাবু। ততক্ষণে গণনা কেন্দ্রের বাইরে ড্রেনেজ ক্যানাল রোড সবুজ আবিরে ভরে গিয়েছে। তারস্বরে বাজছে বাজনা। উল্লাসে মেতে উঠেছেন হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থক। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ শংসাপত্র নিয়ে বেরিয়ে আসার পর প্রসূনবাবু বলেন, ‘‘বিরোধীরা যে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ এনেছিলেন, আমার প্রাপ্ত ভোট দেখে নিশ্চই তার সত্যতা প্রমাণিত হচ্ছে না। কারণ ছাপ্পা ভোট দিয়ে নিশ্চই এতটা ভোট পাওয়া যায় না। এই জয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জয়। এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy