বিজয়কে থানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
নিমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া-দাওয়া সবে শেষ হয়েছে। মঞ্চে শুরু হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। চার দিকে খুশি খুশি পরিবেশ। কিন্তু ধীরে ধীরে বোঝা গেল, বিয়ের নিয়ম-কানুন কিছুই জানা নেই পাত্রের। গাঁ-গঞ্জে এমনটা সচরাচর হয় না। আত্মীয়-স্বজনের সন্দেহ হয়। এটা ওটা আরও কিছু প্রশ্ন করে সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। ভেস্তে যায় বিয়ে। পাত্রকে রাতভোর আটকে রেখে রবিবার সকালে তাকে তুলে দেওয়া হয় বসিরহাট থানার পুলিশের হাতে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে ভিন রাজ্য থেকে বিয়ে করতে এসেছিল ওই যুবক। উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা বিজয় পাল নাথকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে নারীপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের দণ্ডিরহাটের বাসিন্দা সইফুল আলি (নাম পরিবর্তিত)। শনিবার রাতে তাঁর শ্যালিকার বিয়ের আসর বসেছিল বাড়িতে। দিন তিনেক আগে হাড়োয়ার বাসিন্দা মহম্মদ বিশু মণ্ডল ও হাফিজুল মণ্ডল নামে দুই ঘটক বছর কুড়ির মেয়েটিকে পছন্দ করে বিয়ের ঠিক করে বিজয় পাল নাথের সঙ্গে। সে সময়ে অবশ্য তাকে পরিচয় করানো হয়েছিল মহম্মদ আব্বাস মোল্লা নামে। দুই ঘটক জানিয়েছিল, আব্বাসের বাড়ি হাড়োয়ায়। সে উচ্চশিক্ষিত। কাজ করে কলকাতার একটি কারখানায়।
শ্যালিকার বিয়েতে কোনও রকম ত্রুটি রাখতে রাজি ছিলেন না জামাইবাবু। সাধ্যমতো সমস্ত আয়োজন করেন তিনি। অতিথিদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে শুরু হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। আর সে সময় থেকেই হবু বরের কার্যকলাপে একটু একটু করে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে মেয়ের পরিবারে। জানা যায়, উচ্চশিক্ষিত বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া বর আসলে কোনও দিন স্কুলেই যায়নি।
পুলিশ জানায়, গোলমাল বুঝে বিশু এবং হাফিজুল পালায়। পাত্রের সঙ্গে আরও ৮-১০ এসেছিল। তারাও সটকে পড়ে। হিন্দিভাষী পাত্রটিকে আটকে রেখে রাত দেড়টা পর্য়ন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করে কনের পরিবারের লোকজন। লোকটি বিশেষ সুবিধের নয়, মোটামুটি সেটা বুঝে নেন তাঁরা। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। বিশু এবং হাফিজুলের খোঁজ চলছে বলে ডানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy