আর্থিক সঙ্কটের কারণ দেখিয়ে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে দিলেন ‘বেলিশ ইন্ডিয়া লিমিটেড’ কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে ভদ্রেশ্বরের গেটবাজার এলাকায় জিটি রোডের ধারে চিনিকলের যন্ত্রাংশ তৈরির ওই কারখানায় এই নোটিস দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ১২০ জন শ্রমিক।
শ্রমিকদের অভিযোগ, অক্টোবর মাস থেকে তাঁরা বেতন পাচ্ছিলেন না। শ্রমিকদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া পিএফ এবং ইএসআইয়ের টাকাও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জমা করছেন না বলে তাঁদের অভিযোগ। পুলিশ এবং শ্রম দফতরে তাঁরা এ সব কথা জানিয়েছেন। একাধিক বার বৈঠকেও সমাধান সূত্র বেরোয়নি।
২০০৮ সালে মাস ছ’য়েকের জন্য এক বার বন্ধ হয়েছিল ৬০ বছরের পুরনো এই কারখানাটি। সে বার ২২ জন শ্রমিকে সাসপেন্ড করা নিয়ে অসন্তোষের জেরে কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এ বার অবশ্য আর্থিক সঙ্কটের কারণ দেখিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মেশিন শপ বিভাগের কর্মী অমল চক্রবর্তী বলেন, “ছাব্বিশ বছর ধরে চাকরি করছি। মালিকের খামখেয়ালিপনায় পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছে। দু’বছর বাকি অবসরের। এখন কারখানা বন্ধ হলে কোথায় যাব, কী ভাবে সংসার চালাব!” ফিটিংস বিভাগের আর এক কর্মী সৌমেন চক্রবর্তীর কথায়, “গত ছ’মাস ধরে বেতন না পেয়ে এমনিতেই অবস্থা খারাপ। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকেও আমরা বঞ্চিত।” শ্রমিকেরা জানালেন, তাঁদের তৈরি মেশিন বিদেশের বাজারেও যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। তা সত্ত্বেও সংস্থা এই সুনাম ধরে রাখতে পারছে না।
চন্দননগরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, “আমাদের কিছু না জানিয়েই কোম্পানি নোটিস জারি করেছে। কারখানা খোলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রম দফতর সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।” চন্দননগরের ডেপুটি লেবার কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত কারখানা খোলা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।