Advertisement
E-Paper

মন্ত্রীর নির্দেশে বাগনানে বন্ধ কৃষক-বাজারের নির্মাণকাজ

নিম্ন মানের ইট-বালি দিয়ে বাগনান-১ ব্লকে কৃষক-বাজার তৈরির অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কৃষি ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের নির্দেশে শনিবার থেকে সেই কাজ বন্ধ হয়ে গেল।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০১:৫৮
বন্ধ পড়ে রয়েছে কাজ। ছবি: সুব্রত জানা।

বন্ধ পড়ে রয়েছে কাজ। ছবি: সুব্রত জানা।

নিম্ন মানের ইট-বালি দিয়ে বাগনান-১ ব্লকে কৃষক-বাজার তৈরির অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কৃষি ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের নির্দেশে শনিবার থেকে সেই কাজ বন্ধ হয়ে গেল।

মন্ত্রী তাঁর দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে এ দিন ওই নির্মাণকাজ পরিদর্শনে যান। নিজে হাতে ইমারতি সরঞ্জাম পরীক্ষা করেন। একই ভাবে সরঞ্জাম পরীক্ষা করেন ইঞ্জিনিয়াররাও। তার পরেই মন্ত্রী ওই নির্মাণকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার দেবরঞ্জন বসুকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

মন্ত্রী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমাদের সকলের মনে হয়েছে নির্মাণকাজে নিম্ন মানের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছিল। সরঞ্জামের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। রিপোর্ট যথাযথ না হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সম্প্রতি মন্ত্রীর কাছে ওই অভিযোগ জানান তৃণমূল পরিচালিত বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নয়ন হালদার।

ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার দেবরঞ্জনবাবু নিম্ন মানের সরঞ্জাম দিয়ে কৃষক-বাজার তৈরির অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, “সব অভিযোগ মনগড়া। কাজে কোনও গাফিলতি নেই। ওয়ার্ক-অর্ডার মেনে যথাযথ মানের সরঞ্জামই ব্যবহার করা হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই একটি করে কৃষক-বাজার তৈরি হওয়ার কথা। চাষিরা যাতে তাঁদের উৎপাদিত ফসল সরাসরি পাইকারি ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারেন সে জন্যই ওই প্রকল্পের পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে এক দিকে ফড়েদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং অন্য দিকে, ফসল বা সব্জির দামও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে তাঁর আশা। এক-একটি কৃষক-বাজার তৈরির জন্য আনুমানিক পাঁচ বিঘা করে জমি বরাদ্দ করা হয়। এই বাজারের মধ্যে নিলামঘর, গুদাম এবং চাষিদের সব্জি বিক্রির জায়গা থাকার কথা। কৃষক-বাজারে যাতায়াতের জন্য সংলগ্ন রাস্তাঘাটের পরিকাঠামোরও উন্নয়ন ঘটানো হবে।

কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে রাজ্যে ৯৫টি কৃষক-বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিটির জন্য বরাদ্দ পাঁচ কোটি টাকা। এক লপ্তে পাঁচ বিঘা জমি যে হেতু পাওয়া মুশকিল, সেই কারণে বিভিন্ন ব্লকের সরকারি বীজ-খামারের অব্যবহৃত জমিতেই ওই বাজার তৈরি হবে বলে ঠিক করা হয়।

বাগনান ১-সহ হাওড়া জেলার পাঁচটি ব্লকে ওই বাজার তৈরি হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে উলুবেড়িয়া-১ এবং উদয়নারায়ণপুর ব্লকে নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শ্যামপুর-১ এবং আমতা-১ ব্লকেও ওই বাজার তৈরির কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। বাগনান-১ ব্লকের হিজলকের বীজ-খামারে কৃষক-বাজার তৈরির কাজ শুরু হয় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি।

বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, “আমরা ব্লকের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে সরঞ্জামগুলি পরীক্ষা করিয়ে দেখেছিলাম তা নিম্ন মানের। এ নিয়ে ওই ঠিকা সংস্থাকে বারবার সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু লাভ না হওয়ায় মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানাই।” সেই অভিযোগ পেয়েই শনিবার হিজলকে যান কৃষি ও কৃষি বিপণন মন্ত্রী। কৃষি বিপণন দফতরের হয়ে ওই কৃষক-বাজার তৈরির কাজটি রাজ্য বিপণন পর্ষদ। পর্ষদের পদস্থ ইঞ্জিনিয়াররাও মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। তাঁদেরও ধারণা, সরঞ্জামগুলি নিম্ন মানের। দেবরঞ্জনবাবু নিজের পক্ষ নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করলেও মন্ত্রী তাতে কর্ণপাত করেননি। তখনই নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ (রাজা) সেনও। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কৃষক-বাজারটি তৈরি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু মাঝপথে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তা শেষ করা যাবে কি না, সে ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন সংশয় প্রকাশ করেন। মন্ত্রী অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, সরঞ্জাম পরীক্ষার পরে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে অসুবিধা হবে না।

nurul absar arup roy bagnan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy