Advertisement
E-Paper

চা-শ্রমিকদের ৭০ কোটি দেবে ডানকান

উত্তরবঙ্গের ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজের ১৫টি চা বাগানে শ্রমিকদের বকেয়া মেটাতে ও বাগান পুনরুজ্জীবনে প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রয়োজন। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্য সরকার ও ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজের বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী দিনে সেই অর্থ জোগাড় করে বাগানে বিনিয়োগ করবে সংস্থাটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০২

উত্তরবঙ্গের ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজের ১৫টি চা বাগানে শ্রমিকদের বকেয়া মেটাতে ও বাগান পুনরুজ্জীবনে প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রয়োজন। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্য সরকার ও ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজের বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আগামী দিনে সেই অর্থ জোগাড় করে বাগানে বিনিয়োগ করবে সংস্থাটি।

সম্প্রতি কলকাতা ভিত্তিক ওই সংস্থাটির বিভিন্ন বাগানে অনাহারে একাধিক শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এই চাপান-উতোরের মধ্যেই গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিরও রং লাগে।

এমন কী, ডানকান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তেরও নির্দেশ দেয় রাজ্য। যদিও ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে, ওই সব শ্রমিকের মৃত্যুর সঙ্গে অনাহার বা অপুষ্টির কোনও সম্পর্ক নেই। অন্য কারণে অসুস্থতা থেকেই তা ঘটেছে। এবং বাগান এলাকায় অন্য কারও মৃত্যু ঘটলেও তার দায় বাগানের উপর এসে পড়ছে। এ দিন সংস্থাটির নাগেশ্বরী বাগানের শ্রমিক রেণু মাহালি নায়েকের (৪৮) মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মাস তিনেক ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। স্বাস্থ্য দফতরও জানিয়েছে, খিঁচুনি ও রক্তে সংক্রমণ থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র ও স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন ডানকান ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান জি পি গোয়েন্কা। পরে বাসুদেববাবু গোয়েন্কাকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘ওঁদের বন্ধ চা বাগানগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বাগানগুলোর বকেয়া মেটাতে বাজার থেকে ঋণ নেবেন ওঁরা। পাশাপাশি চা বাগান শ্রমিকদের বর্তমান মজুরি দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও কথা দিয়েছেন।’’

পরে জি পি গোয়েন্‌কা জানান, প্রয়োজনীয় অর্থ কী ভাবে জোগাড় করা যায় তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাগানের পরিস্থিতি ও আগামী দিনের পরিকল্পনার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। বৈঠক খুবই সদর্থক হয়েছে।’’ কত দিন ওই অর্থ বিনিয়োগ করা হবে তা এখনই নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানান গোয়েন্‌কা। তবে একবারে নয়, কিছু সময় ধরে ওই টাকা বিনিয়োগ করবেন তাঁরা।

স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, শীতের পরেই ডানকান গোষ্ঠী তাদের বন্ধ চা বাগানগুলো খোলার এবং এই সময়েও শ্রমিকদের নিয়মিত মজুরি দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। উল্লেখ্য, সাধারণ ভাবে মরসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় সব বাগানেই ডিসেম্বর থেকে চা পাতা তোলা বন্ধ থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই কারখানাও বন্ধ থাকে। যে হেতু চা বাগান পরিচালনার ক্ষেত্রে নগদের জোগান গুরুত্বপূর্ণ, তাই সেই সময় বাগান বন্ধ থাকায় নগদ জোগানও বন্ধ হয়ে যায়। তাই ভরা মরসুমে চা বিক্রির বাড়তি অর্থের একটা অংশ শীতের মজুরি দেওয়ার জন্য আলাদা করে রাখে চা শিল্পমহল। কিন্তু এ বার যে হেতু মরসুমের সময়েও ডানকানের চা কম তৈরি ও বিক্রি হয়েছে, তাই শীতের সময় নগদ জোগানে টান পড়ার একটা আশঙ্কা ছিল। এ দিনের বৈঠকে সেই সময় শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার বিষয়েও সংস্থার তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে দাবি রাজ্যের।

পাশাপাশি বন্ধ বাগানগুলোতে লঙ্গরখানাও খোলা হয়েছে। ডানকান-কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই তাঁরা বাগানের শ্রমিকদের কথা ভেবে দিনে এক বার খাবার দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন। আগামী দিনেও তা চালু রাখতে চান তাঁরা।

tea-workers duncan group monetary aid 70 crores
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy