Advertisement
E-Paper

অনুমতি নিয়ে রাস্তা সারিয়েও নোটিস পেল ক্লাব

১১৬বি জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদা বাজার থেকে কামারদা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কংক্রিটের রাস্তা রয়েছে।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১৯

প্রতীকী ছবি।

বেহাল গ্রামের রাস্তা। অভিযোগ, বহু আর্জি জানালেও পাঁচ বছরে সেটি সারিয়ে দেয়নি প্রশাসন। তাই সেই রাস্তা সারানোর অনুমতি চেয়েছিল স্থানীয় একটি ক্লাব। সেই মতো পঞ্চায়েত রাস্তা বন্ধ থাকবে বলে স্থানীয়স্তরে বিজ্ঞপ্তিও দেয়। কালীপুজোর খরচ বাঁচিয়ে রাস্তাটি সারায় ওই ক্লাব। এর পরেও ক্লাবটিকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরাল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-৩ ব্লকের লাউদা গ্রাম পঞ্চায়েত। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, কোনও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কি এ ভাবে কোনও ক্লাবকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিতে পারেন? যদিও পঞ্চায়েত নিজেদের অবস্থানে অনড়।

১১৬বি জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদা বাজার থেকে কামারদা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কংক্রিটের রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটির একটি অংশ বড় গর্তে ভরা। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, কামারদা, ধামাই-সহ পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দার কাছে জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র উপায় হল এই রাস্তা। অভিযোগ, বহুবার রাস্তাটি সংস্কারের আশ্বাস মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর স্থানীয় ‘ব্যাড বয় ক্লাবের’ উদ্যোগে রাস্তাটি সারানো হয়। এর জন্য তাঁরা ২০ হাজারেরও বেশি টাকা খরচ করেছেন বলে ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি। ২২ অক্টোবর ক্লাবটিকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠান গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। ২৮ তারিখের মধ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ওই ক্লাবের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। শো-কজ়ের চিঠিতে পঞ্চায়েতের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাস্তা সংস্কার হওয়ার পর বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেখানে প্রশাসনের সম্পর্কের নানা কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে।

ক্লাবের সূত্রের খবর, ২০০১ সাল থেকে এলাকার জনা চল্লিশেক যুবক প্রতি বছর কালীপুজোর আয়োজন করেন। নথিভুক্ত ক্লাব না হওয়ায় সরকারি আর্থিক সাহায্য পান না তাঁরা। তবে এ বার পুজোয় রাস্তা সারানোর অনুমতি চেয়ে তাঁরা আবেদন জানান গ্রাম পঞ্চায়েতে। সেই মতো ওই অংশে রাস্তার কাজের জন্য যাতায়াত বন্ধ রাখতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল পঞ্চায়েত। এর পরেও এসেছে নোটিস। ওই ক্লাবের সম্পাদক অজয় গিরি বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নিয়ম মেনে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আমরা ক্লাবের তহবিল এবং স্থানীয় কিছু জনের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বেহাল রাস্তা সারিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেছি বলে অভিযোগ এনে শো-কজ় করা হয়েছে।’’

কিন্তু এ ভাবে কি কোনও ক্লাবকে শো-কজ় করতে পারে পঞ্চায়েত? তৃণমূল পরিচালিত লাউদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিকাশ জানার কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের নোটিস দেওয়ার এক্তিয়ার আছে কি না, বলতে পারব না।’’ তা হলে নোটিস কেন? প্রধানের জবাব, ‘‘ওই ক্লাব মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে জেনে আমরা তাদের অনুমতি দিয়েছিলাম। ইট ভাটা থেকে আমরাও কিছু ছাই কিনে দিয়েছি। কিন্তু ওরা শুধুমাত্র নিজেদের প্রচার করে বেড়াচ্ছে।’’ কতটা প্রাসঙ্গিক গ্রাম পঞ্চায়েতের এই নোটিস? কাঁথি-৩-এর বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, ‘‘ক্লাব এবং গ্রাম পঞ্চায়েত উভয়েই স্থানীয়। তাই নির্দিষ্ট দিনে ক্লাব কর্তৃপক্ষ যেতেই পারেন। কী হচ্ছে, তা আমিলক্ষ্য রাখছি।’’

East Midnapore club
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy