চার্জশিট থেকে ৪০৯ নম্বর ধারাটি বাদ যাওয়ার সুবাদে বুধবার সারদা-মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন সৃঞ্জয় বসু। একই কারণে আর এক অভিযুক্ত মদন মিত্রও যাতে জামিন পেয়ে না-যান, সে জন্য সিবিআই আঁটঘাট বাঁধছে।
কেন্দ্রীয় তদন্ত-ব্যুরোর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যে চার্জশিট তারা গত ১৭ নভেম্বর আদালতে জমা দিয়েছিলেন, তাতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ নম্বর ধারাটি যুক্ত করার জন্য বৃহস্পতিবার আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আবেদন মঞ্জুর না-হলে সিবিআই উচ্চতর আদালতে যাবে বলে ব্যুরো-সূত্রের ইঙ্গিত।
প্রসঙ্গত, ১৭ নভেম্বরের ওই চার্জশিটে সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়-সহ সারদা-কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বেশ কয়েক জনের নাম থাকলেও মদন বা সৃঞ্জয়ের নাম ছিল না। ১৮ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিটটি গ্রহণ (কগনিজেন্স) করা হয়। আর তখনই ৪০৯ নম্বর ধারাটি চার্জশিট থেকে বাদ চলে গিয়েছে। সেই সুযোগে জামিন পেয়ে গিয়েছেন সৃঞ্জয়। কারণ, ৪০৯ ধারা না-থাকলে গ্রেফতারের ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে হয়, সৃঞ্জয়ের ক্ষেত্রে যা হয়নি। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য: অবিলম্বে ওই ধারা না-জুড়লে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রও জামিন পেয়ে যেতে পারেন। তাই সিবিআই তড়িঘড়ি মাঠে নেমেছে।
মদন গ্রেফতার হয়েছিলেন গত ১২ ডিসেম্বর। আগামী সোমবার তাঁর জেল-যাপনের ৬০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। মদনের জামিন ঠেকাতে এই মুহূর্তে সিবিআইয়ের সামনে দু’টো রাস্তা খোলা। এক, যে ভাবে হোক আগামী তিন দিনের মধ্যে মদনের নামে চার্জশিট পেশ করা। কিংবা দুই, ৪০৯ নম্বর ধারাটি চার্জশিটে যুক্ত করা। বস্তুত দ্বিতীয় লক্ষ্যেই এ দিন আদালতে আর্জি জানিয়েছে সিবিআই। উল্টো দিকে মদনের কৌঁসুলিরাও বসে নেই। সৃঞ্জয়ের জামিনের দৃষ্টান্ত মাথায় রেখে পরিবহণমন্ত্রীকে জামিন পাইয়ে দিতে তাঁরাও মাঠে নেমেছেন। মদনবাবুর কৌঁসুলি অশোক মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “৪০৯ ধারা না-থাকলে ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে হবে। মদন মিত্রের ক্ষেত্রে সিবিআই যা এখনও দেয়নি। সোমবারের মধ্যে না-দিলে সামনের বৃহস্পতিবার মন্ত্রীকে আদালতে তোলার সময়ে আমরা সৃঞ্জয় বসুর উদাহরণ টেনে মদনবাবুর জামিনের আর্জি জানাব।”
কিন্তু সিবিআইয়ের আবেদন মেনে আদালত যদি ৪০৯ ধারা আগের চার্জশিটে জুড়ে দেয়?
আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে মদনের নামে চার্জশিট পেশের জন্য সিবিআই হাতে আরও তিরিশ দিন সময় পেয়ে যাবে। কারণ, ৪০৯ ধারা থাকলে অভিযুক্তের জেল-যাপনের ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিলেও চলে। সে রকমটা হলে সৃঞ্জয়কে কি ফের গ্রেফতার করা যাবে?
আইনি মহল তেমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে। “জামিন পেয়ে যাওয়ার পরে এ ভাবে আর গ্রেফতার করা যায় না,” বলছেন এক আইনজীবী।
চার্জশিটে ৪০৯ যুক্ত না-হলে সুদীপ্ত সেনের আইনজীবী নরেশ ভালোড়িয়াও সৃঞ্জয়ের উদাহরণ টেনে জামিন চাইতে পারেন।
তবে সুদীপ্ত সেন নিজে কিংবা দেবযানী মুখোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ, সন্ধির অগ্রবাল, রজত মজুমদার বা নিতু সরকারেরা ওই ফাঁক গলে জামিন চাইতে পারবেন না। কারণ, ওঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে চার্জশিট পেশ হয়ে গিয়েছে। তাই ওঁঁরা এই আইনের আওতায় পড়ছেন না বলে দাবি করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy