সভায় মেজাজ উৎসবের। ছবি: বিকাশ মশান
বক্তৃতার শুরুতেই উপস্থিত জনতাকে বাংলায় সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ‘বাংলার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, দুর্গাপুরের পরিশ্রমী মানুষকে আমার নমস্কার’ । সঙ্গে সঙ্গে সভা চত্বরে গর্জন, ‘হর হর মোদী’, ‘জয় শ্রীরাম’।
শনিবার দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর সভা উপলক্ষে এমনই উৎসবের মেজাজ ছিল জনতার। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নামে জয়ধ্বনি, ছিল তা-ও। এই ‘মেজাজ’ দেখা যাচ্ছিল, এ দিন ভোর থেকেই। জেলা ও ভিন্-জেলা থেকে বিজেপির সদস্য-সমর্থকেরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। তাঁদের অনেকেরই মাথায় ছিল ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা টুপি। এমনকি, কারও কারও মাথায় পদ্মফুলের আকারের টুপিও দেখা গিয়েছে!
উৎসাহীদের ভিড়েই দেখা গেল রোহিত মণ্ডল, শিবাশিস ঘোষদের। এসেছিলেন কাটোয়া থেকে। তাঁদের কথায়, ‘‘ভোরে বেরিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে দেখার সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়?’ সভায় এসেছিলেন দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি কলেজের কয়েক জন ছাত্রও। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বহু কাজ করছেন দেশের জন্য। তরুণ সমাজও নানা ভাবে উপকৃত হচ্ছেন। ফলে প্রধানমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি তো দিতেই হবে।’’
দেশের প্রধানমন্ত্রী আসছেন নিজের এলাকায়। সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি ডিএসপি টাউনশিপের অনেকেই। তাঁদেরই কয়েক জন বাড়ির ছোটদেরও নিয়ে এসেছিলেন সভাস্থলে। তবে ভিড়ের জন্য বছর বারোর নাতিকে সঙ্গে নিয়ে নেহরু স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢোকার সাহস পাননি আনন্দ ঘোষ। দূর থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে, জানান আনন্দবাবু।
বক্তব্য শোনার পাশাপাশি এ দিন বেশ কয়েক জন কীর্তনিয়া খোল, করতাল নিয়ে ভিড়ের মধ্যে হাজির হয়েছিলেন। তিলক রোড ধরে ভিড়ের মধ্যে কীর্তন করতে করতে যাওয়ার সময়ে তাঁরা জানান, বাঁকুড়া থেকে এসেছিলেন। অনেকেই খোলের বোলে নাচতেও শুরু করলেন। সভায় মহিলাদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিল স্কুল পড়ুয়াদের একাংশও।
এ দিন স্টেডিয়ামের আশপাশে রাস্তা জুড়ে বসেছিল বিভিন্ন অস্থায়ী দোকান। সভায় আসার ফাঁকে অনেকেই পেয়ারা, ডিম টোস্ট, পরোটার দোকানে লাইন দিয়েছিলেন। দেদার বিক্রি হয়েছে ঝালমুড়িও। তরণী দাস নামে এক ঝালমুড়ি বিক্রেতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে ভিড় হয়েছিল ভালই। ভাল বিক্রিও হয়েছে।’’ তিলক রোডে একটি জায়গায় কয়েক জন যুবক মিলে তৈরি করছিলেন লিট্টি। ভিড় যত বেড়েছে, সেই দোকানে বিক্রিও বেড়েছে।
তবে ভিড় নিয়ে চাপানউতোর রয়েছে পুলিশ ও বিজেপি-র মধ্যে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা যায়, এ দিনের সভায় ৮০ হাজারের মানুষের জমায়েত হয়েছিল। তবে বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘‘দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় এসেছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy