Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তোলাবাজির অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সরাতে নির্দেশ

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা। বর্ধমান রাজ কলেজের সেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (টিচার ইন-চার্জ) তারকেশ্বর মণ্ডলকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

তারকেশ্বর মণ্ডল

তারকেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০৩:৪২
Share: Save:

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা। বর্ধমান রাজ কলেজের সেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (টিচার ইন-চার্জ) তারকেশ্বর মণ্ডলকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার পার্থবাবু বলেন, ‘‘বিভাগীয় সচিবকে বলা হয়েছে ওঁকে (তারকেশ্বরবাবু) সরিয়ে দিতে। ওঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে অবিলম্বে তার তদন্ত শুরু করতে হবে। উনি পদে থাকলে তদন্তে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।’’ কলেজ সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার পরিচালন সমিতির বৈঠকের পরে এই নির্দেশ কার্যকর হবে। তারকেশ্বরবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ সরে যেতে আমার আপত্তি নেই।’’

কলেজের জনা পঞ্চাশ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের নানা স্তরে চিঠি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তাঁদের অভিযোগ, তারকেশ্বরবাবু চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কিছু কর্মী ও বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে দৌরাত্ম্য শুরু করেছেন। শিক্ষকদের কাছে তোলা চাওয়া হচ্ছে। দিতে না চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরে নিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, টাকা দিতে না চাওয়ায় কয়েক জন শিক্ষককে মারাও হয়েছে।

এই অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী। কলেজ সূত্রের দাবি, বুধবার ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় সেই খবর বেরনোর পরে তারকেশ্বরবাবুও নড়েচড়ে বসেন। ‘সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে’— এই মর্মে লেখা একটি চিঠিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশকে সে দিনই জোর করে সই করানো হয় বলে অভিযোগ। যদিও তারকেশ্বরবাবুর দাবি, ‘‘সমস্ত অভিযোগ যে মিথ্যে, ৮৭ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সই করে জানিয়েছেন। এর পরে কী বলার থাকতে পারে?’’ বৃহস্পতিবার অবশ্য কলেজের চার শিক্ষক ফের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁরা দাবি করেন, পার্থবাবু আশ্বাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি শোধরানো হবে। পরিচালন সমিতির সদস্য শিখা আদিত্য বলেন, ‘‘কলেজে গুন্ডামির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এ বার হয়তো পাল্টাবে।’’

তারকেশ্বরবাবু বর্ধমান শহরে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবেও পরিচিত। শিক্ষিকার শ্লীলতাহানি বা পড়ুয়াদের মারধরের পাশাপাশি দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেও তাঁর নাম জড়িয়েছে। তোলাবাজির অভিযোগ ওঠার পরে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দলের নেতা-কর্মীদের একাংশও। তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত কাউন্সিলর বশির আহমেদের কথায়, ‘‘ওঁর এই কাজে দলের নাম খারাপ হচ্ছে।’’ তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বর্ধমান জেলা সভাপতি সুশান্ত বারি বলেন, ‘‘আমরা তারকেশ্বরবাবুকে নানা সময়ে সতর্ক করেছি।’’

পদ থেকে সরলেও শিক্ষক হিসেবে কলেজে থাকবেন তারকেশ্বরবাবু। শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, শাসক দলের অন্দরে প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি সমস্যা তৈরি করবেন। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘ওটা আমার বিচার্য বিষয় নয়। কড়া পদক্ষেপ করছি। অভিযুক্ত কোন দলের, তদন্তে তা দেখা হবে না।’’ তারকেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে বাড়িতে অশান্তি হচ্ছে। অন্য কেউ দায়িত্ব নিলে আমার অসুবিধে নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Extortion Teachers Educational Minister
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE