Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
HS

মাধ্যমিকে প্রথম দশে না থাকার মনখারাপটা আজ থেকে উধাও সেকেন্ড বয়ের

ঋত্বিককুমার সাহু, উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয়এ বার দ্বিতীয়ের নাম ঘোষণা হবে। আরে আমার নাম? ঋত্বিক। হ্যামিলটন স্কুল। তমলুক। আমিই তো! আনন্দে চিৎকার করে উঠল মা। আমিও কিছু ক্ষণ চুপ করে গেলাম। চোখ থেকে একটু জলও পড়ল। কি মুশকিল!

ঋত্বিককুমার সাহু, উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয়

ঋত্বিককুমার সাহু, উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয়

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৮ ১৬:৩১
Share: Save:

রেজাল্ট ভাল হবে জানতাম। কিন্তু প্রথম দশে আমার নাম থাকবে তো? এই একটা কথা বার বার মনে হচ্ছিল কাল থেকে। আসলে মাধ্যমিকে প্রথম দশে নাম ছিল না তো। তখন একটু একটু মনখারাপ হয়েছিল। সে বার নাম ছিল ঠিক ১৩ নম্বরে। এ বার ভাল কিছু হোক, এটাই চাইছিলাম। সত্যি...

মা সকালে টিভি চালিয়েছে। প্রথম স্থানাধিকারীর নাম ঘোষণা হল। বাহ্‌! দারুণ ব্যাপার! কলাবিভাগ থেকে এ বার প্রথম হয়েছে গ্রন্থন নামে একটি ছেলে। খুব ভাল। এ বার দ্বিতীয়ের নাম ঘোষণা হবে। আরে আমার নাম? ঋত্বিক। হ্যামিলটন স্কুল। তমলুক। আমিই তো! আনন্দে চিৎকার করে উঠল মা। আমিও কিছু ক্ষণ চুপ করে গেলাম। চোখ থেকে একটু জলও পড়ল। কি মুশকিল!

না আর কোনও মনখারাপ নয়। প্রথম দশে না থাকার আফসোসটা এ বার থেকে আর নেই। মাধ্যমিকের পর যেটা একটু হলেও ছিল। বাবা-মা দু’জনেই এসে আমায় জড়িয়ে ধরল। কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না ওরা। স্কুলের শিক্ষকরাও এসেছেন। স্কুল থেকে ফোন, স্যররা অসম্ভব খুশি। ফোন আসছে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীদের। আস্তে আস্তে আমাদের রামকৃষ্ণ মিশন পাড়াতে ভিড়ে জমে যাচ্ছে। সত্যি এ বার দারুণ লাগছে।

আরও খবর:

ফার্স্ট বয়ের দিনে পড়াশোনা, রাত জেগে নাটকের মহড়া আর গান

শুনেছি আমার বাবা বিদ্যুৎ সাহু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরে রসায়নে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। বাবার হাসিমুখটা দেখে মন ভাল হয়ে যাচ্ছে। উনি তমলুকের অপর একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক। আমাকেও পড়িয়েছেন উনি। মাকে নাকি মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। উনিও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আমায়।

আজ রেজাল্টের টেনশন কাটাতে বাবার সঙ্গে কাল কথা হচ্ছিল ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে। কবে খেলা দেখব। কাকে পছন্দ বাবার। আমি কিন্তু জার্মানির কট্টর সমর্থক। তবে হ্যাঁ ক্রিকেট অনেক বেশি প্রিয় আমার। স্নান করার আগে কিংবা ঘুম থেকে উঠে যখনই সময় পেয়েছি, ব্যাট হাতে ক্রিকেট খেলে নিয়েছি। আর সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার পাতায় চোখ বোলাতেও ভুলিনি। আর এই সব কিছুতে ভাই আগ্নিকও আমার সঙ্গী। হ্যামিলটন স্কুলেই ক্লাস এইটে পড়ে ও। আর আমাদের আরও একটা মিল। দু’জনেই আমরা বিরাট কোহালির ভক্ত। আমাদের আদিবাড়ি হলদিয়ার বারবাজিৎপুর গ্রামে গেলেই এই সব মজাগুলো আরও বেশি করে হয়।

আমার সার্জেন হওয়ার ইচ্ছা, তা নিয়েও কথা হচ্ছিল কাল বাড়িতে। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় আমি ১৩ নম্বর স্থানে রয়েছি। এইমসে পড়তে চাই। তবে আজ সবথেকে বেশি আনন্দ হচ্ছে মাধ্যমিকের মনখারাপটা মুছে যাওয়ায়। আমার দুই প্রিয় বন্ধুর নামই রোহিত। ওদের মধ্যে এক জন উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম দশেই রয়েছে। খুব ভাল লাগছে। সত্যি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE