Advertisement
E-Paper

ভুল করেছে রাখি, বলছেন স্বামী

সদ্যোজাত শিশুকন্যার আঙুল কেটে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতালের সিনিয়র নার্স রাখি সরকারকে সাসপেন্ড করল স্বাস্থ্য দফতর। পুলিশের তরফেও তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তাকে ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অনুপরতন মোহান্ত

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৫ ০২:২৪

সদ্যোজাত শিশুকন্যার আঙুল কেটে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতালের সিনিয়র নার্স রাখি সরকারকে সাসপেন্ড করল স্বাস্থ্য দফতর। পুলিশের তরফেও তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে তাকে ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু রোগীর স্যালাইনের চ্যানেল কাটার দায়িত্ব কার, তা নিয়ে মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্যকর্মী থেকে হাসপাতালের একাংশ নার্সের মধ্যে বিতর্ক দানা বেধেছে। অভিযুক্ত নার্স রাখিদেবীর হাতে কী করে এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়েও দিনভর সহকর্মী থেকে পড়শিদের মধ্যে আলোচনা চলে।

শিশুর আঙুল কেটে বাদ দেওয়ার ঘটনাকে ওই নার্সের অনিচ্ছাকৃত গাফিলতি ও দুর্ঘটনা বলেই বালুরঘাট হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসককে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই কমিটির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কড়া মনোভাবের কথা আঁচ পেয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা রিপোর্ট পাওয়া মাত্র অভিযুক্ত নার্সকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। রাখিদেবীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাতে ওয়ার্ডের আলো কমিয়ে দেওয়া হয়। কম আলোতে কেন ও শিশুটির চ্যানেল কাটতে গেলেন? কেন ওই ওয়ার্ডে থাকা অন্য নার্সের সাহায্য তিনি নিলেন না? নার্সরা চ্যানেল কাটতে পারেন কিনা? হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘নিয়ম মতো রোগীর স্যালাইনের চ্যানেল চিকিৎসকই কাটবেন বলে জানি। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাই হয়। তবে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবের কারণে ওই কাজ নার্সেরাই করেন বলে এক অলিখিত নিয়ম চালু হয়ে রয়েছে।’’

বালুরঘাট হাসপাতালের নার্সিং সুপার ইন্দ্রানী দত্তের কথায়, ‘‘গত প্রায় আট বছর ধরে রাখি নার্সের কাজে যুক্ত। শান্ত স্বভাবের মেয়ে রাখি যে এমন কাণ্ড ঘটাবে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।’’ ইন্দ্রানীদেবীকেও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শোকজ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি।

রবিবার রাতে ওই ঘটনার পরই অভিযুক্ত নার্স গা ঢাকা দেন বলে অভিযোগ। এদিন বালুরঘাট শহর লাগোয়া চকভৃগু অঞ্চলের নদীপাড় বালিকা বিদ্যালয় পাড়ার বাসিন্দা রাখিদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখা হয় তার স্বামী উত্তম বসাকের সঙ্গে। রাখিদেবী কোথায় তিনি জানাতে চাননি। স্ত্রীকে সাসপেন্ড করার কথা তখনও উত্তমবাবু জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘রাখি ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুটির আঙুল কাটেনি। অসাবধানতায় ভুল করে ফেলেছে।’’ শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মীমাংসার জন্য তারা অনুরোধ করবেন বলে জানান উত্তমবাবু। চিকিৎসকদের একাংশ ওই যুক্তি মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, একজন সিনিয়র নার্স স্যালাইন লাগানো এবং খোলার কাজ করেন। তাদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া আছে। ওই কাজে যতটা সাবধান ও আন্তরিকতার সঙ্গে করা উচিত তা হয়নি বলেই ওই ঘটনা ঘটে। এ দিন হাসপাতাল সুপারকে বিক্ষোভ দেখিয়ে বালুরঘাট টাউন কংগ্রেস থেকে শিশুর ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্ত নার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরও শাস্তির দাবি করা হয়েছে। ঘটনার দিন রবিবার রাতে জরুরি বিভাগে যে চিকিৎসকের ডিউটি ছিল বলে নথিতে নাম উল্লেখ রয়েছে। আদতে তিনি সেদিন ডিউটিতে ছিলেন না। সুপার তপনবাবু বলেন, ‘‘অনেক সময় ডিউটি পরিবর্তন হয়।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভেন্দু সরকার এ দিন শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে যান।

anup ratan mohanta rakhi sarkar balurghat nurse nurse husband finger cutting nurse
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy