লেভি বাবদ মোটা টাকা দাবি করেছিল মাওবাদীরা। গোটা ঘটনা পুলিশকে জানিয়েছিলেন বেলপাহাড়ির পচাপানি গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ দাস। তার ঠিক এক মাস বাদেই অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে এসে বাড়িতেই বিদ্যুৎ এবং তাঁর স্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালালো। গুলি থেকে বাঁচতে ছাদ থেকে ঝাঁপ মারেন বিদ্যুতের স্ত্রী। মাটিতে পড়ে পা ভেঙেছেন তিনি। গোটা ঘটনা নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মুখ খুলতে না চাইলেও এলাকার বাসিন্দা থেকে আহত বিদ্যুৎ সকলেরই দাবি, টাকা না দেওয়ায় মাওবাদীরাই গুলি চালিয়ে শাসিয়ে গিয়েছে।
সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের পলিটব্যুরো সদস্য এবং শীর্ষ নেতা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষানজির মৃত্যুর পর দীর্ঘ ন’বছর মাওবাদীদের কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বাংলার মাটিতে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, ফের এ রাজ্যে সংগঠন তৈরির চেষ্টা করছে লাল গেরিলারা। তার কিছু নমুনাও পাওয়া গিয়েছে গত কয়েক মাসে। মাওবাদী নেতাদের আনাগোনা, গ্রামে বৈঠকের খবর পাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। এ বছর স্বাধীনতা দিবসের আগে গ্রামে গ্রামে কালো পতাকা তোলার ফতোয়াও দেয় মাওবাদীরা। গত ১৫ অগস্ট সকালে বেলপাহাড়ির বিভিন্ন এলাকায় স্বাধীনতা দিবসকে ‘কালা দিবস’ পালন করার ডাক দিয়ে মাওবাদী পোস্টারও পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রামে ঢুকে গুলি চালানোর মতো বেপরোয়া হয়ে উঠবে মাওবাদী স্কোয়াড, এমনটা ভাবতে পারেননি এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে জেলা পুলিশের কর্তারাও। বৃহস্পতিবার রাতে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া পচাপানি গ্রামে বিদ্যুৎ দাসের ঘটনা ফের উস্কে দিয়েছে আতঙ্ক।
পচাপানি গ্রামটি বেলপাহাড়ি থানা এলাকায় শিমূলপাল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে পড়শি রাজ্যের সীমানা ঘেঁষা এই গ্রাম শক্ত ঘাঁটি ছিল লাল গেরিলাদের। কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ (সিআরপিএফ)-এর ১৬৯ ব্যাটালিয়নের সদর দফতর নেগুরিয়া ক্যাম্প থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পচাপানি কয়েক বছর আগেও প্রত্যন্ত ছিল। সম্প্রতি সড়ক যোগাযোগ অনেকটাই ভাল হয়েছে।