Advertisement
E-Paper

ঘরে ঠাঁই নেই, কলেজের ছাদে পরীক্ষা দিলেন প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা!

খোলা ছাদে ডেকরেটরের থেকে ভাড়া করা চেয়ার-টেবিল। শেষ পৌষের দুপুরে রোদ্দুর গায়ে মেখে দু’ধারে ঝুঁকে সার-সার মাথা। ঠিক যেন চড়ুইভাতির পাত পড়েছে!

সম্রাট চন্দ 

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০

খোলা ছাদে ডেকরেটরের থেকে ভাড়া করা চেয়ার-টেবিল। শেষ পৌষের দুপুরে রোদ্দুর গায়ে মেখে দু’ধারে ঝুঁকে সার-সার মাথা। ঠিক যেন চড়ুইভাতির পাত পড়েছে!

কিন্তু টেবিলে শালপাতার থালা নয়, পরীক্ষার খাতা। শীতের রোদ হলেও মাঝদুপুরে তার তেজ কম নয়। পরীক্ষার্থীরা কেউ রুমালে মাথা ঢেকেছেন, কেউ চড়িয়েছেন টুপি। কেউ ঘাড় গুঁজে লিখে চলেছেন, কেউ তাকাচ্ছেন ইতিউতি।

বিকেল গড়াতেই আবার রোদের তেজ উবে ঝুপ করে নেমে আসা মরা-গোধূলির আলো। উত্তর থেকে মাঝে-মাঝে শিরশিরে হাওয়া। শুক্রবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টে— নদিয়ার শান্তিপুর কলেজের দোতলার ছাদে এ ভাবেই হয়ে গেল স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। রানাঘাট কলেজের পড়ুয়ারা টানা আড়াই ঘণ্টা পরীক্ষা দিলেন নীল আকাশের নীচে।

গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে চলছে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। এ দিন ইংরেজি দিয়ে শেষ হল। এবং শেষ দিনেই এই কাণ্ড! এই ভাবে পরীক্ষা হয় নাকি? নিদেন পক্ষে মাথার উপরে একটু ছাদ জুটবে না? পরীক্ষার সময়ে দু’জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে যতটা দূরত্ব থাকা দরকার, তা-ও থাকবে না?

আরও পড়ুন: মসজিদে জুম্মাবারের নমাজ পড়বেন মেয়েরা

শান্তিপুর কলেজের অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের যুক্তি, “আমাদের এত পরীক্ষার্থীকে বসানোর জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক জনকে ছাদে বসানো হয়।’’ জায়গা নেই তো এত পরীক্ষার্থীকে সেখানে পরীক্ষাকেন্দ্র দেওয়া হল কেন? এত দিনই বা কী ভাবে চলেছে?

কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এত দিন নানা বিভাগের আলাদা আলাদা পরীক্ষা থাকায় সমস্যা হয়নি। শেষ দিন আবশ্যিক ইংরেজি থাকায় রানাঘাট কলেজের ২৩০০-রও বেশি পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে আসেন। তাতেই গোল বেধেছে। কিন্তু সামান্য ম্যারাপ টাঙানোর ব্যবস্থাটুকুও করা গেল না? সকলেই কি সুস্থ ভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পেরেছেন?

অধ্যক্ষের বক্তব্য, “ওখানে জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। নজর রাখার জন্য শিক্ষকও ছিলেন।’’ হিজুলি থেকে বিএ পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন শিবশঙ্কর বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘দুপুরের রোদে কষ্ট তো হচ্ছিলই। অনেকে মাথায় রুমাল চাপা দিচ্ছিলেন মাঝে-মাঝে। কিন্তু কী করব? পরীক্ষা না দিয়ে তো চলে আসতে পারি না!’’

শান্তিপুর কলেজে এখন কোনও পরিচালন কমিটি নেই। কলেজের প্রশাসক হিসাবে রয়েছেন রানাঘাটের মহকুমাশাসক মণীশ বর্মা। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আমায় কিছুই জানাননি।’’ তবে অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় কি এমন অনুমতি দিতে পারে? কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহের নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, “শান্তিপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ আমায় কিছু জানাননি।’’ উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘ওই কলেজে পরীক্ষার্থীর খুব চাপ ছিল। তাই হয়তো ওঁরা এই ব্যবস্থা করেছেন। ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

Exam Graduation Shantipur College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy