Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় চার বাঙালি পর্বতারোহীর

কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় করতে গত মঙ্গলবার বিকেলে ক্যাম্প ফোর থেকে রওনা দিয়েছিলেন অভিযাত্রীরা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০১:১১
Share: Save:

ফণীর চোখরাঙানি। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাস সব সময়ে না মেলা। ক্যাম্প থ্রি-তে পৌঁছে দুর্যোগের মুখে পড়া। এ সব বাধা তুচ্ছ করে বুধবার সকালে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার (৮,৫৮৬ মিটার) শীর্ষে আরোহণ করলেন বাংলার চার অভিযাত্রী— রুদ্রপ্রসাদ হালদার, বিপ্লব বৈদ্য, রমেশ রায় এবং শেখ সাহাবুদ্দিন। তবে পঞ্চম অভিযাত্রী, হাওড়ার কুন্তল কাঁড়ার অসুস্থ হয়ে পড়ায় সামিট করতে পারেননি বলেই খবর।

কাঞ্চনজঙ্ঘা জয় করতে গত মঙ্গলবার বিকেলে ক্যাম্প ফোর থেকে রওনা দিয়েছিলেন অভিযাত্রীরা। পাঁচ বাঙালি অভিযাত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুণের দল এবং বিদেশি পর্বতারোহীরাও। সারা রাত পথ চলে বুধবার সকালে শৃঙ্গের শীর্ষে পৌঁছন রুদ্রপ্রসাদেরা। তাঁদের সঙ্গে থাকা ট্র্যাকিং যন্ত্র অবশ্য অনেক আগে থেকেই গোলমাল করতে শুরু করেছিল। পরে জানা যায়, কুন্তল শৃঙ্গে উঠতে পারেননি।

দুপুরের দিকে খবর আসে, কুন্তল এবং বিপ্লব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁদের ক্যাম্প ফোরে পৌঁছনো নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। রাতের দিকে খবর, দীর্ঘ অভিযানের কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়া বিপ্লব এবং অসুস্থ কুন্তলকে নীচে সামিট ক্যাম্পের দিকে নামিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। সামিট করে ফেরার পথে পর্বতারোহী নির্মল পুরজা এবং তাঁর শেরপারাও কুন্তলদের নীচে নামাতে চেষ্টা করছেন বলে খবর।

কী হয়েছে কুন্তলের? যে এজেন্সির সঙ্গে এই অভিযানে গিয়েছেন কুন্তলেরা, সেই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সামিটে পৌঁছনোর আগেই কুন্তলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাই তাঁকে ফিরতে হয়। এর পরে তাঁকে সামিট ক্যাম্পে নামিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। তবে পর্বতারোহী মলয় মুখোপাধ্যায় এবং সত্যরূপ সিদ্ধান্ত নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে মনে

করছেন, ক্যাম্প টু-তে না পৌঁছনো পর্যন্ত বিপদ কাটছে না। কারণ তাঁদের কথায়, ‘‘হেলিকপ্টারে উদ্ধারের কথা ভাবা হলেও ক্যাম্প ফোর-এর উচ্চতায় তা পৌঁছতে পারবে না। তার জন্য অভিযাত্রীদের আগে ক্যাম্প টু-এর কাছাকাছি নেমে আসতে হবে। সেটা বৃহস্পতিবারের আগে সম্ভব নয়।’’

হিমালয়ের আট হাজারি শৃঙ্গগুলির মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযান অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এখানে অভিযানের সংখ্যাও কম। এর আগে মাত্র ছ’জন বাঙালির ঝুলিতে সফল ভাবে এই শৃঙ্গ আরোহণের কৃতিত্ব রয়েছে।

২০১৪ সালের ২০ মে এই অভিযানে গিয়েই দুই শেরপা-সহ চিরতরে নিখোঁজ হয়ে যান পর্বতারোহী ছন্দা গায়েন। সেই ঘটনার পাঁচ বছর পরে ফের একই পথে বাঙালি অভিযাত্রীরা। তাই চিন্তায় ছিলেন পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবেরা। সামিটের খবর পাওয়ার পরে রুদ্রপ্রসাদের স্ত্রী রীতা রক্ষিত বলেন, ‘‘ট্র্যাকিং যন্ত্রে সারা রাত চোখ রেখেছিলাম। তবে সকালের দিকে খবর না আসায় খুবই চিন্তা হচ্ছিল।’’

এ বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও হিমালয়ের একাধিক আট হাজারি শৃঙ্গে অভিযানে গিয়েছেন মোট আট জন বাঙালি পর্বতারোহী। তাঁদের মধ্যে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে এই মুহূর্তে সামিটের অপেক্ষায় রয়েছেন চন্দননগরের পিয়ালী বসাক। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাসের চো ইয়ো শৃঙ্গ অভিযান ঘিরে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kangchenjunga Bengalis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE