ফেরা: কলকাতা বিমানবন্দরে আশরাফুল। ছবি: সুদীপ ঘোষ
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকরিতে মাসে ৫০ হাজার টাকা মিলবে, আশ্বাস ছিল দালালের। বাস্তবে মেলে সাফাইকর্মীর কাজ। সঙ্গে মারধর, অত্যাচার। কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্ট। সৌদি আরবে পাড়ি দিয়ে এমনই স্বপ্নভঙ্গ হয় পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের যুবকের। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথ ছিল বন্ধ। এক বছর চার মাস পরে, সোমবার পুলিশ ও সিআইডি-র সাহায্যে বাড়ি ফিরলেন আশরাফুল হক।
ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে স্নাতক মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রামের বছর তিরিশের আশরাফুল। মুম্বই যান কাজের চেষ্টায়। সেখানে ‘আকবর ওভারসিজ’ নামে এক সংস্থার দালাল তাঁকে সৌদি আরবের রিয়াধের ব্যাঙ্কে আইটি ডেভেলপারের কাজের প্রতিশ্রুতি দেয়। দালালকে প্রায় চার লক্ষ টাকা দেন আশরাফুল।
যুবকের অভিযোগ, ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে রিয়াধে পৌঁছতে তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেয় ওই দালালের লোকেরা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম ছ’মাস ওরা ঘরে আটকে মারধর করত।’’ ছ’মাস পরে ঝাড়ু নিয়ে শৌচাগার সাফাইয়ের কাজ পান তিনি। মাইনে ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১২,০০০।
আশরাফুল বলেন, ‘‘দেশে ফিরতে হলে ওদের ১০ হাজার রিয়াল (প্রায় এক লক্ষ বাহাত্তর হাজার টাকা) দিতে হতো।’’ গত অক্টোবরে দালাল-সংস্থা গাড়িচালকের কাজ দেয় আশরাফুলকে। সেই সময় রিয়াধে তাঁর দেখা হয় সৌদি আরবের দম্মম শহরের মহম্মদ হাবিব নামে এক যুবকের। আদতে কলকাতার বাসিন্দা হাবিবের কাছে নিজের দুর্দশা খুলে বলতেই মেলে সাহায্যের আশ্বাস।
আরও পড়ুন:পাঁচ শিশুকে বিক্রি করেন দাস দম্পতি
রিয়াধ থেকে পালিয়ে দম্মম পৌঁছন আশরাফুল। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালকে ই-মেলে জানান নিজের পরিস্থিতি। পুলিশ সুপার সে কথা জানান সিআইডি-কে। ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে আশরাফুলকে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ দিন বিমানে কলকাতায় পৌঁছে আশরাফুল বলেন, ‘‘হাবিব আর পুলিশ-প্রশাসনকে ধন্যবাদ।’’
সন্ধ্যায় আশরাফুল বাড়ি পৌঁছন। যুবকের স্ত্রী সান্ত্বনা বেগমের স্বস্তি, ‘‘দু’বছরের ছেলে এত দিনে ওর আব্বাকে চিনবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy