Advertisement
E-Paper

ভোটের ময়দানে চালিয়ে খেলে বাজিমাত দিলীপের

বেলা যত গড়িয়েছে ভোটের অঙ্ক দেখে মেজাজ হারিয়েছেন মানস। এক একটি এলাকার নেতাকে ফোন করেছেন আর গলার স্বরে ঝরে পড়েছে হতাশা।

পাশাপাশি: গণনা কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষ এবং মানস ভুঁইয়া। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

পাশাপাশি: গণনা কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষ এবং মানস ভুঁইয়া। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৪:২৭
Share
Save

তখন দুপুর সওয়া বারোটা। ষষ্ঠ রাউন্ডের গণনা চলছে। খড়্গপুরের গণনা কেন্দ্রে প্রার্থীদের বসার ঘরে পাশাপাশি বসে মানস ভুঁইয়া এবং দিলীপ ঘোষ।

প্রথম রাউন্ড থেকে মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপই এগিয়ে ছিলেন। হঠাৎই খবর আসে, দিলীপকে পিছনে ফেলে ৩৬৫ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন তৃণূলের মানস। সে কথা জেনে দিলীপ বললেন, ‘‘মানসবাবু যা খেলার খেলে নিয়েছেন। এ বার আমি খেলব। দেখতে থাকুন, চালিয়েই খেলব!’’ এ বার দিলীপের দিকে এক পলক তাকালেন মানস। তার পর প্রবীণ নেতার চোখ চলে গেল ঘরে থাকা টিভির পর্দায়।

বেলা যত গড়িয়েছে ভোটের অঙ্ক দেখে মেজাজ হারিয়েছেন মানস। এক একটি এলাকার নেতাকে ফোন করেছেন আর গলার স্বরে ঝরে পড়েছে হতাশা। দিনের শেষে প্রায় ৮৮ হাজার ভোটে হেরে গিয়ে মানস স্বগতোক্তি করেছেন, ‘‘একটা এমএলএ-ই কাজ করল। আর কেউ নয়!’’ দিনের শেষে হিসেবও বলছে, মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে শুধু খড়্গপুর (গ্রামীণ)-এই লিড পেয়েছে তৃণমূল।

এ বার ভোটে রাজ্যের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল মেদিনীপুর। প্রধান প্রতিপক্ষ দু’জনই ভূমিপুত্র। দু’জনের কাছেই লড়াইটা সম্মানের। দিলীপ ঘোষ একে বিজেপির রাজ্য সভাপতি, তায় মেদিনীপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত খড়্গপুর সদরের বিধায়ক। আর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে পোড়খাওয়া রাজনীতিক মানস এই প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলেন জনতার। ছিল তৃণমূলের অন্দরে তাঁকে নিয়ে কোন্দল কাঁটা। আর এই প্রথম মানসের লড়াইয়ের ময়দানে ছিল না সবং। এই বিধানসভা ঘাটাল কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে।

লড়াই কঠিন জানা ছিল দুই প্রার্থীরই। তাই প্রচারে মাটি আঁকড়ে পড়েছিলেন দিলীপ-মানস দু’জনই। মানস তো ভোটের পরেও এলাকায় ঘুরে ঘুরে হিসেব কষেছিলেন। বুঝতে চেয়েছিলেন, কোন এলাকা তাঁকে লিড দেবে। অন্য দিকে, ভোটের দিন থেকেই আত্মবিশ্বাসী শুনিয়েছে দিলীপকে। জোরালো ভাবেই বলেছেন, ‘‘চাচার মতো নেতাকে হারিয়েছি। আর উনি (মানস) তো ভাতিজা!’’

এ দিনও সকাল থেকেই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন দিলীপ। মানসের পাশে বসে রসিকতা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছেন, ‘‘মানসবাবু অনেকদিন রাজনীতি করছেন। সেই তুলনায় আমি তো নতুন!’’ ওই ঘরে থাকা প্রশাসনের এক কর্মী তখন বলে বসেন, ‘‘দু’জনের পাঞ্জাবির রংটা এক মনে হচ্ছে! দু’টোই তো হলুদ।’’ শুনে হেসে ফেলেন মানস, দিলীপ দু’জনেই। দিলীপ বলেন, ‘‘আমারটা ঠিক হলুদ নয়, অনেকটা গেরুয়ার দিকে যাচ্ছে।’’

বেলা গড়িয়ে সন্ধে নেমেছে। ক্রমশ মানসের চারপাশের ভিড় পাতলা হয়েছে। নিজের নির্বাচনী এজেন্টের সঙ্গে একাই বসে থাকতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। উল্টো ছবি গেরুয়া শিবিরে। উচ্ছ্বাস ভেসে কর্মী-সমর্থকেরা মেতেছেন আবির খেলায়।

এ বার তো তা হলে মন্ত্রী হওয়া পাকা? চওড়া হাসি বজায় রেখেই দিলীপের জবাব, ‘‘আমার মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে নেই। বাংলায় পরিবর্তন করার ইচ্ছে রয়েছে।’’

Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 TMC BJP Dilip Ghosh Manas Bhunia

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}