ফি বছর ভাঙছে সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা দ্বীপ। মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও সম্প্রতি দ্বীপটিতে ঘুরেও এসেছেন।
মঙ্গলবার ঘোড়ামারার পাশ দিয়ে সাগরে যাওয়ার পথে ওই দ্বীপের দিকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। লঞ্চের গতি কমিয়ে দেওয়া হয় ওই অংশে এসে। বাঁধের উপরে দাঁড়িয়ে অনেকে হাত নেড়ে, চিৎকার করে সমস্যার কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। যা বুঝতে পেরে মুখ্যমন্ত্রীও পাল্টা হাত নেড়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।
হাজার পাঁচেক মানুষের বাস এই দ্বীপে। ভাঙন রোখা না গেলে এক সময়ে গোটা দ্বীপটাই জলে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা আছে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে এ দিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কী ভাবে ভাঙনের মুখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় এবং বাসিন্দাদের কী ভাবে বিকল্প জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে শীঘ্রই তিনি প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এর আগে ভেটিভার ঘাস লাগিয়ে, বোল্ডার ফেলে ভাঙন রোখার চেষ্টা হলেও তা কার্যত বিফলে গিয়েছে। ঘোড়ামারার ভাঙন ঠেকানো না গেলে এক সময়ে সাগর দ্বীপও বিপন্ন হতে পারে বলে প্রশাসনের কর্তাদের আশঙ্কা। এ দিন মমতা সে বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
একগুচ্ছ সরকারি কর্মসূচি নিয়ে মঙ্গলবার জলপথে সাগরে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কচুবেড়িয়ায় নেমে গাড়িতে পৌঁছন সাগরে সেচ দফতরের বাংলোয়। আজ, বুধবার সেখানেই থাকার কথা তাঁর। সাগরমেলার প্রস্তুতিও খতিয়ে দেখবেন মমতা। মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিংয়ের অবস্থা কী, নজর থাকবে সে দিকেও। গত বছর সাগর মেলা থেকে ফেরার পথে কচুবেড়িয়ায় পদপিষ্ট হয়ে কয়েক জনের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তেমন কোনও বিপর্যয় যাতে এ বার এড়ানো যায়, তা নিয়ে সতর্ক আছে প্রশাসন। বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে চান মুখ্যমন্ত্রীও। এ দিন ঘাট থেকে সড়ক পথে যাওয়ার পথে দু’ধারে বহু মানুষের ভিড় চোখে পড়েছে। অনেক জায়গায় গাড়ি থামাতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে কয়েকবার গাড়ি থেকে নেমেও পড়েন মমতা। কথা বলেন স্থানীয় মানুষের সঙ্গে। সাগরে পৌঁছে তিনি সোজা কপিল মুনির আশ্রমে গিয়ে পুজো দেন।