প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী পর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু সেই পরিষেবা কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
ওই দফতর সূত্রের খবর, রোজই বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিযুক্তদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অন্তর্গত করা হচ্ছে। কিন্তু এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত বেসরকারি হাসপাতালকে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। আরও বেশি বেসরকারি হাসপাতালকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সম্প্রতি তাদেরর সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য ভবনের হিসেব অনুযায়ী এ-পর্যন্ত ৪০০ বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে ‘এ’ বা প্রথম বিভাগের অর্থাৎ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মানের সমতুল্য মাত্র ৪১টি বেসরকারি হাসপাতাল এই প্রকল্পে এসেছে। ‘বি’ বা দ্বিতীয় বিভাগে প্রায় ৭০ এবং ‘সি’ বা তৃতীয় বিভাগের প্রায় ৩০০ বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত হয়েছে এই প্রকল্পে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সব মিলিয়েও সংখ্যাটা পর্যাপ্ত নয়। কোন বিভাগের হাসপাতাল কোন চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করতে পারবে বা করতে বাধ্য, তা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রথম বিভাগের বেসরকারি হাসপাতালকে হৃদ্যন্ত্র ও মস্তিষ্কের জটিল অস্ত্রোপচার থেকে প্রসবের জন্য অস্ত্রোপচার— সবই করতে হবে। তৃতীয় বিভাগে থাকা হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় থাকা সব ধরনের পরিষেবা দিতে হচ্ছে না। ফলে অধিকাংশ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথীর সব ধরনের সুযোগ পাচ্ছেন না কর্মী-শিক্ষকেরা।
বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের একাংশ জানান, স্বাস্থ্যসাথীর সঙ্গে যুক্ত প্রথম বিভাগের বেসরকারি হাসপাতালে অধিকাংশ অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে অনেক কম টাকায় (৪০ থেকে ৬০ হাজার)। এটা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই স্তরের অনেক হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী নয়। তবে রোগীর চাপ এবং বেসরকারি হাসপাতালের চাহিদার মধ্যে দ্রুত সামঞ্জস্য তৈরি হবে বলেই আশা করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিষেবা দেওয়ার পরে সরকারের ঘর থেকে কী ভাবে টাকা পাওয়া যাবে এবং তা পেতে দেরি হবে কি না, এই ধরনের কিছু প্রশ্ন ছিল কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের। তাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সংশয় ছিল। তবে বৈঠকে সেগুলি মেটানো হয়েছে। ‘‘বেশি হাসপাতাল এই প্রকল্পে যুক্ত হলে সাধারণ মানুষের কাছে বিকল্প বেশি থাকবে। বাড়ির কাছে বেসরকারি ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাবে। তাই আরও বেসরকারি হাসপাতালকে এই প্রকল্পে আনতে স্বাস্থ্য দফতর সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে,’’ বলেন অজয়বাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy