Advertisement
০২ মে ২০২৪

খুচরো নিয়ে বিদেশিদের পাশে পাহাড়

অতিথির আস্থা ফিরিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি ধরে রাখলেন পাহাড়বাসী। শীতের সকালে ঘুম ভাঙতেই শুক্রবার খুচরো জোগাড়ের জন্য ঘুমে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনে ভিড় করেছিলেন এলাকার মানুষজন। পাকদণ্ডী পথ ধরে এঁকেবেঁকে অনেক দূর চলে গিয়েছিল লাইনটা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:০০
Share: Save:

অতিথির আস্থা ফিরিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি ধরে রাখলেন পাহাড়বাসী।

শীতের সকালে ঘুম ভাঙতেই শুক্রবার খুচরো জোগাড়ের জন্য ঘুমে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনে ভিড় করেছিলেন এলাকার মানুষজন। পাকদণ্ডী পথ ধরে এঁকেবেঁকে অনেক দূর চলে গিয়েছিল লাইনটা। হঠাৎই সে লাইনে সামিল হলেন তিন জন বিদেশি। অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা গবেষক রয় স্মিথ এর আগে ছ’বার ভারতে এসেছেন। মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেলেনও এর আগে বার দু’য়েক ভারতে ঘুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুদুর অস্ট্রেলিয়া থেকে দার্জিলিঙে পৌঁছে যে এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখে যে পড়তে হবে তা ভাবতে পারেননি তাঁরা। যে ক’টা একশো টাকার নোট জোগাড় করতে পেরেছিলেন শেষ হয়ে গিয়েছে তা। এক কাপ চা যে খাবেন তারও উপায় নেই। সবই তো পাঁচশো-হাজারের নোট। সে নোট কেউ নিতে চাইছে না।

অগত্যা ভোর হতেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই শাখার সামনে চলে আসেন তাঁরা। উদ্দেশ্য কিছু খুচরো সংগ্রহ। কিন্তু ম্যানেজার জানিয়ে দেন খুচরো নেই। ফলে প্রমাদ গোনেন তাঁরা।

এই পরিস্থিতিতে ত্রাতা হলেন লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষগুলিই। যে যাঁর মতো করে জোগাড় করে হাজার টাকার খুচরো তুলে দিয়েছেন বিদেশিদের হাতে। হাসিমুখে সেই টাকা নিয়ে দার্জিলিং ঘুরতে বেরিয়েছেন তাঁরা। দলের মধ্যে দু’জন আগে এলেও বাকি ১২ জনের এটাই প্রথম ভারত সফর। টেলিফোনে রয় স্মিথ বলেছেন, ‘‘ভারতের এই এলাকার বাসিন্দারা খুবই ভাল এবং সহজ সরল। আমার এখানে বারবার আসার কারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি এখানকার সহজ সরল বাসিন্দারাও।’’

৩ নভেম্বর উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছেন অস্ট্রেলিয়ার ১৪ জনের দলটি। চুইখিম, ইয়েলবঙ, কোলাখাম, কালিম্পঙের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে গত বৃহস্পতিবার ঘুমে পৌঁছেছে দলটি। খুচরোর সমস্যা তখন থেকেই। দলের সঙ্গে ছিলেন পর্যটন সংস্থার কর্ণধার রাজ বসুও। বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন রাজও। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদের কাছে এবং আমার কাছে যত একশো টাকার নোট ছিল সব শেষ। কয়েক দিন অনেকেই ৫০০ টাকার নোট নিলেও বৃহস্পতিবার থেকে তা নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ দিন যে এক কাপ চা খাব তারও উপায় নেই।’’ এ দিন দলটি দার্জিলিং যাওয়ার কথা। তবে তার আগে খুচরো না পেলে সে যাত্রাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সে কারণেই রয় স্মিথ, মেলব্রি এবং ব্রেনটন তিন পর্যটককে নিয়ে ঘুমের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনে খুচরো জোগাড়ের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন রাজ। ব্যাঙ্ক খোলার আগেই কর্তৃপক্ষ খুচরো নেই বলে জানালেও লাইনে দাঁড়ানো বাসিন্দারা খুচরো টাকা দেন ওই বিদেশিদের হাতে। আগের দিন গাড়ি চালকরাও কিছু টাকা জোগাড় করে দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ghum Tourists Currency note
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE