Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Confusion regarding Biometrics

ধান বিক্রিতে বায়োমেট্রিক, জানাই নেই বহু কৃষকেরা

অভিজিৎ জানান, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থাতে তিনটি বিকল্প থাকছে। আধার কার্ডে থাকা চাষির আঙুলের ছাপ না মিললে চোখের রেটিনার ছবি নেওয়া হবে।

কেনার আগে ধানের গুণমান পরীক্ষা করা হচ্ছে। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকায়।

কেনার আগে ধানের গুণমান পরীক্ষা করা হচ্ছে। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

দীপঙ্কর দে, পীযূষ নন্দী
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪
Share: Save:

সরকারি সহায়ক মূল্যে চাষিদের থেকে ধান কেনার জন্য গত পয়লা নভেম্বর থেকেই তৈরি প্রশাসন। কিন্তু হুগলিতে এখনও ধান বিক্রিতে গতি নেই। কারণ, এখনও খেত থেকে সব ধান কাটা হয়নি। কিন্তু তারপরেও ধান বিক্রিতে হয়রানির আশঙ্কা করছেন চাষিদের অনেকে। কারণ, ধান কেনায় অনিয়ম রুখতে চলতি মরসুম থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অথচ, বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই বহু চাষিরই।

ধান কেনায় আরও স্বচ্ছতা আনতেই এই ব্যবস্থা বলে জানান জেলা খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা। আরামবাগ মহকুমা খাদ্য নিয়ামক অভিজিৎ মাইতি বলেন, “এ বার ধান কেনার পদ্ধতি পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। প্রকৃত চাষিকে এ বার ক্রয় কেন্দ্রে আসতে হবে। ডিলারদের কাছ থেকে তিনি যে ভাবে রেশন নেন, তেমনই বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে চাষিদের ধান কেনা হবে।”

অভিজিৎ জানান, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থাতে তিনটি বিকল্প থাকছে। আধার কার্ডে থাকা চাষির আঙুলের ছাপ না মিললে চোখের রেটিনার ছবি নেওয়া হবে। রেটিনাও না মিললে মোবাইল নম্বরের সঙ্গে যে আধার নম্বর যুক্ত আছে, সেই মোবাইলে ওটিপি যাবে। সেই ওটিপি-র মাধ্যমে চাষি ধান বিক্রি করতে পারবেন। থাকতে হবে কিসান ক্রেডিট কার্ডও। তবে, ভাগচাষি বা ভূমিহীন চাষিদের ক্ষেত্রে কিসান ক্রেডিট কার্ড না থাকলে, তিনি যে প্রকৃত চাষি, সেই সংক্রান্ত শংসাপত্র নিতে হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিওদের কাছ থেকে। যদি সেই চাষি ২০ কুইন্টালের বেশি ধান বিক্রি করতে চান, সে ক্ষেত্রেই ওই শংসাপত্র লাগবে।

জেলার অধিকাংশ চাষি এখনও এই নতুন পদ্ধতির কথা জানেন না। তাঁদের কাছে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। পুরশুড়ার ভাঙামোড়ার শেখ আব্বাস আলি, আরামবাগের হরাদিত্য গ্রামের বিনয় পাল, গোঘাটের বদনগঞ্জের হিরু মালিকদের মতো কিছু চাষি জানিয়েছেন, ধান কেনায় দুর্নীতি রুখতে এ ধরনের ব্যবস্থা জরুরি ছিল। তবে, বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা অবগত নন। আবার ছোট চাষিদের মধ্যে খানাকুলের শঙ্কর মাইতি, তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙার সুদর্শন দে প্রমুখের বক্তব্য, রেশন তোলার মতোই আঙুলের ছাপ এক হওয়া নিয়ে হয়রানি বাড়বে। অনেকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার কার্ডেরও সংযোগ নেই।

জেলা খাদ্য দফতর জানিয়েছে, বর্গাদার, ভাগচাষি, ভূমিহীন চাষিদের নিজেদের বিস্তারিত বিবরণ লিখে নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হবে। বিডিও তা খতিয়ে দেখে শংসাপত্র দিলে তাঁর কাছ থেকে ধান কেনা হবে। চাষিরা সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন।

হুগলিতে এ বার জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯০ টন। কুইন্টালপ্রতি দাম ধার্য হয়েছে ২১৮৩ টাকা। সরকারি ক্রয় কেন্দ্র তথা সিপিসি-তে দিলে আরও ২০ টাকা উৎসাহ-ভাতা যোগ করে চাষিরা পাবেন ২২০৩ টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Paddy Sells
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE