Advertisement
১১ জুন ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

সংক্রমণ বাড়ছে, কমছে সচেতনতা

মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে গোটা রাজ্যের মতো হুগলিতেও সংক্রমিতের সংখ্যা অনেকটাই তলানিতে চলে গিয়েছিল।

মগরায় প্রচার-মিছিলে মাস্কহীন তৃণমূল কর্মীরা।

মগরায় প্রচার-মিছিলে মাস্কহীন তৃণমূল কর্মীরা। ছবি: সুশান্ত সরকার।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৮
Share: Save:

কমে গিয়ে করোনা আবার হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু তলানিতে চলে যাওয়া সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষণ নেই হুগলিতে। সাধারণ মানুষের অসচেতনতার দোসর হয়েছেন ‘ভোটভিক্ষু’ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। দলে দলে তাঁরা ভিড় জমাচ্ছেন প্রচার কর্মসূচিতে। কিন্তু সংক্রমণ ঠেকানোর প্রাথমিক কর্তব্য, অর্থাৎ, মাস্ক পরা বা দূরত্ববিধি পালনের দায় তাঁদের থাকছে না।

পাড়ার মোড়ে মিটিং বা বাড়ি বাড়ি প্রচার, তাবড় নেতানেত্রীদের জনসভা— বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রার্থী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে মাস্ক পরার বালাই থাকছে না। এখানেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন তুলছেন— কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শীর্ষ নেতানেত্রীর মঞ্চে যাঁরা উঠছেন, তাঁদের করোনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। মাস্কও থাকছে মুখে। অথচ সেই বক্তব্য শুনতে আসা জনতার জন্য কোনও রক্ষাকবচ থাকছে না। এ ক্ষেত্রে তাঁদের নিজেদের সচেতনতা যেমন নেই, তেমনই নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসনের হেলদোল নেই বলেও অভিযোগ।

বাজার-হাটেও একই ছবি। ‘চৈত্র সেল’-এর বাজার চলছে সর্বত্র। শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে। কিন্তু কেনাকাটা করতে আসা সিংহভাগ লোকের মুখে মাস্ক থাকছে না। বালাই থাকছে না দূরত্ব-বিধিরও। চিকিৎসক প্রদীপকুমার দাস বলেন, ‘‘মানুষ বোধহয় ভাবছেন, করোনা জয় হয়ে গিয়েছে। সেই জন্য শিথিলতা গ্রাস করেছে। সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে তাঁরা উদাসীন হয়ে পড়েছেন।’’

গত ডিসেম্বর মাস থেকে করোনার কামড় কমতে শুরু করেছিল। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে গোটা রাজ্যের মতো হুগলিতেও সংক্রমিতের সংখ্যা অনেকটাই তলানিতে চলে গিয়েছিল। ফের তা বাড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করার পরেও তাঁরা বলে এসেছিলেন, মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি বজায় রাখা এবং বার বার হাত ধোওয়ার অভ্যাস পরিবর্তনের সময় আসেনি। এ জন্য করোনা পুরোপুরি নির্মূল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ তাঁরা বারবারই দিয়েছেন। কিন্তু জনতার একাংশের কানে তা পৌঁছয়নি। বরং ধীরে ধীরে শিথিলতা বেড়েছে। এই উদাসীনতাই করোনার ফিরে আসার পথ প্রশস্ত করছে বলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

পরিস্থিতি কেমন?

এক মাস আগে হুগলিতে যেখানে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭০ জনের আশপাশে, রবিবার তা প্রায় সাড়ে ৪০০ ছুঁয়ে ফেলেছে। দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে রবিবার ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ঠিক এক মাস আগে, অর্থাৎ গত ৪ মার্চ দৈনিক সংক্রমিত হয়েছিলেন মাত্র ৮ জন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি। ফের পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। কিন্তু যে ভাবে চলছে, তাতে ভোটের পরে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়, সেটাই ভাবাচ্ছে। মানুষ এখনও নিজের ভাল বুঝতে পারছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE