Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Bauria Dam Construction

অর্থাভাব, দুই নদীর বাঁধের কাজ থমকে

হাওড়ায় নদীবাঁধের দায়িত্বে থাকা নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি ১ এবং ২ বিভাগ সূত্রের খবর, এমনিতেই বাঁধ বা ধস মেরামতির বড় কোনও দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া হচ্ছে না।

শ্যামপুরের গাদিয়াড়া পর্যটনকেন্দ্রে রূপনারায়ণের বাঁধে ফাটল।

শ্যামপুরের গাদিয়াড়া পর্যটনকেন্দ্রে রূপনারায়ণের বাঁধে ফাটল। —নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১৫
Share: Save:

বর্ষার মরসুম। অথচ, অর্থাভাবে হাওড়ার উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর এবং বাউড়িয়ায় দুই নদীবাঁধ (হুগলি ও রূপনারায়ণ) মেরামতির কাজ কার্যত থমকে গিয়েছে। গত দু’বছর ধরে বাঁধ মেরামতির কাজে নিযুক্ত ঠিকা সংস্থাগুলি বকেয়া টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। এমনকি, জরুরি ভিত্তিতে ২০২১-এর ইয়াস ঝড়ের সময়ে যে সব জায়গায় বাঁধ মেরামতির কাজ করেছিল ঠিকা সংস্থাগুলি, সেই বকেয়াও মেলেনি বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা বকেয়া বলে ঠিকা সংস্থাগুলির দাবি।

ঠিকা সংস্থাগুলির বিপুল বকেয়া যেমন মেটানো যাচ্ছে না, তেমনই বাঁধ মেরামতির কাজও ব্যাহত হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন জেলা সেচ দফতরের পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। বাঁধ বা ধস মেরামতির কাজ না হওয়ায় বর্ষায় এইসব এলাকায় নদীবাঁধে ভাঙন হতে পারে বলে বাসিন্দাদের আশঙ্কা।

জেলা সেচ দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘বর্ষা আরও তীব্র হলে ঠেকা দিয়ে বাঁধ কতটা রক্ষা করা যাবে, তাতে সন্দেহ আছে।’’

হাওড়ায় নদীবাঁধের দায়িত্বে থাকা নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি ১ এবং ২ বিভাগ সূত্রের খবর, এমনিতেই বাঁধ বা ধস মেরামতির বড় কোনও দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া হচ্ছে না। টুকটাক কাজের যে সব দরপত্র হচ্ছে, সেখানেও বেশিরভাগ ঠিকা সংস্থা যোগ দিচ্ছে না আগের বকেয়া না মেটায়। পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বার বার টাকা বরাদ্দ করার জন্য রাজ্য সেচ দফতরে আবেদন করা হচ্ছে।

এই দুই বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানিয়েছেন, চেনা পরিচিত ঠিকা সংস্থাগুলিকে কার্যত হাতে-পায়ে ধরে একান্ত জরুরি কাজ করিয়ে নিতে হচ্ছে। রাজ্য সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি দেখে দফতরের সচিবালয়। সমস্যার কথা তাদের জানানো হয়েছে।’’

ডিভিসি এক লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়লেই জেলার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লক অনিবার্য ভাবে বন্যার কবলে পড়ে। এই দুই ব্লকে অবশ্য বাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়নি। কারণ, এই দুই ব্লকে কাজ হচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায়। কিন্তু ২০২১ সালে এই এলাকায় বন্যার সময় ঠেকা দেওয়ার জন্য বাঁধ মেরামতির কাজ করেছিল যে সবঠিকা সংস্থা, তারা কোনও টাকা পায়নি বলে অভিযোগ।

শ্যামপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ইয়াস ঝড়ে ফলে হুগলি ও রূপনারায়ণের বাঁধের বেশ ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি মেরামতির কাজ যে সব ঠিকা সংস্থা করেছে, তারা কোনও টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। ইয়াসে গাদিয়াড়ায় হুগলি নদীর বাঁধেও ভাঙন ধরেছিল। সাময়িক ভাবে তা মেরামত করা হয়। পরে কয়েক কোটি টাকার মাস্টার প্ল্যান করা হয় পাকাপাকি ভাবে ভাঙন মেরামতি করার জন্য। টাকার অভাবে সেই কাজও শুরু করা যায়নি বলে জেলা সেচ দফতর সূত্রের খবর।

গত বছর শ্যামপুরেরই বেলাড়ি পঞ্চায়েতের পূর্ব বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর পাড়ে ধস নামে। তা কোনওমতে ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। পাকাপাকি মেরামত করার পরিকল্পনা থেকে গিয়েছে কাগজে-কলমে। উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর, বাউড়িয়া এইসব জায়গাতেও হুগলি নদীর বাঁধের অবস্থা শোচনীয়। সম্প্রতি গাদিয়াড়ায় রূপনারায়ণের বাঁধে ফাটল ধরে। সেখানেও কোনওমতে ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rupnarayan Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE