Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Kali Puja 2023

শক্তির আরাধনার সঙ্গে অটুট দুই পরিবারের বন্ধুত্বও

হাওড়ার উলুবেড়িয়ার তুলসীবেড়িয়া পঞ্চায়েতের অভিরামপুর গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ায় বাস ঘোষাল ও বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের। দুই পরিবারের যৌথ মন্দির রয়েছে।

আরাধনা হয় এই প্রতিমার।

আরাধনা হয় এই প্রতিমার। ফাইল চিত্র।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৮
Share: Save:

শক্তির আরাধনা করার জন্য প্রায় পাঁচশো বছর আগে যৌথ ভাবে কালী পুজো শুরু করেছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরা। তারপরে দুই পরিবারেরই শাখা-প্রশাখা বেড়েছে। ঘটে গিয়েছে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত। তবে পুজোর সেই ধারায় ছেদ পড়েনি।

হাওড়ার উলুবেড়িয়ার তুলসীবেড়িয়া পঞ্চায়েতের অভিরামপুর গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ায় বাস ঘোষাল ও বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের। দুই পরিবারের যৌথ মন্দির রয়েছে। সেটির সংস্কারও হয়েছে। দুর্গাপুজোর পরে নির্দিষ্ট দিনে সেখানেই হয় কালীপুজো। বছরের অন্য সময়ে সেখানে কালী প্রতিমার কাঠামো রাখা থাকে। তাকে নিত্যপুজোও করা হয়। দুই পরিবারের সদস্যরা জানালেন, বংশ পরম্পরায় এই কালীপুজোয় যে রীতিনীতি চলে আসছে, সেগুলো তাঁরা যথা সম্ভব মানার চেষ্টা করেন। সেই সূত্রেই এই পুজোয় মাইক-বক্স বাজানো হয় না। কালীপুজোর রাতে বলিদান প্রথাও বন্ধ করা হয়নি। সেই বলির মাংস রান্না করে দেওয়া হয় পুজোর ভোগে। থাকে চিংড়ির পদও।

বর্তমানে পুজোর মূল দায়িত্বে রয়েছেন স্বদেশ ঘোষাল ও অর্ণব বন্দ্যেপাধ্যায়। তাঁরা জানান, প্রায় পাঁচশো বছর আগে মূলত দ্বারিকানাথ ঘোষাল, মধুসূদন ঘোষাল, গঙ্গাধর বন্দ্যোপাধ্যায় মিলে শুরু করেছিলেন এই পুজো। এর কোনও নথি না থাকলেও পরিবারের প্রবীণদের থেকে তাঁরা তেমনই শুনে এসেছেন। শক্তির আরাধনা করার জন্যই এই আয়োজন শুরু হয়েছিল। তবে শক্তির আরাধনার বিশেষ কোনও প্রয়োজন সেই সময়ে হয়েছিল কি না অবশ্য জানা যায় না। প্রথা অনুযায়ী, মন্দিরেই কালী প্রতিমা তৈরি হয়। জন্মাষ্টমীর পরে নির্দিষ্ট পুকুর থেকে মাটি নিয়ে সেখানে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়।

কালীপুজো শুরুর আগে সন্ধ্যায় বাজি পুড়িয়ে শোভাযাত্রা করে ‘অলক্ষ্মী বিদায়’ করা হয়। থাকে বাজনা। যা এই পারিবারিক পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। অর্ণব বলেন, ‘‘আমাদের পুজোয় পুজোটাই আসল। পরিবারের প্রবীণেরা যে রীতি-নীতি মেনে পুজো করতেন, আমরাও সেই ভাবেই করি। পুরোহিত, ঢাকি, যিনি বলি দেন সবাই বংশ পরম্পরায় আসছেন। তবে বিশেষ কারণে প্রতিমা শিল্পী বদলাতে হয়েছে আমাদের।’’ পুজোর পরের দিন গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রসাদ বিলি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় হয়
ভাসান। ভাসানের আগে হয় সিঁদুরখেলা। পারিবারিক পুজো হলেও আশপাশের গ্রামের অনেকেই এই পুজোয় যোগ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE