Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Migrant Labours

মিলল মজুরি, বাড়ির পথে ঝাড়খণ্ডের শ্রমিকেরা

ডালসার ভূমিকায় শ্রমিকেরা খুশি। ঝাড়খণ্ডে রওনা হওয়ার আগে তাঁরা জানান, বর্ষার মরসুমে তাঁদের এলাকা চাষের পক্ষে উপযুক্ত। এই সময়ে তাঁরা ‘খেতি’ করেন।

An image of labours

ডালসা অফিসে শ্রমিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ০৮:২৫
Share: Save:

কাজের পরে পাওনাগণ্ডা মিলছিল না। তার ফলে, ঘরে ফিরতে পারছিলেন না ঝাড়খণ্ড থেকে হুগলির সিঙ্গুরের একটি ইটভাটায় কাজে আসা কিছু শ্রমিক। মুশকিল আসান হল হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডালসা) হস্তক্ষেপে। মজুরি হাতে পেয়ে ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা গত শুক্রবার বাড়ির পথ ধরেন।

ডালসার ভূমিকায় শ্রমিকেরা খুশি। ঝাড়খণ্ডে রওনা হওয়ার আগে তাঁরা জানান, বর্ষার মরসুমে তাঁদের এলাকা চাষের পক্ষে উপযুক্ত। এই সময়ে তাঁরা ‘খেতি’ করেন। এটিই তাঁদের মূল উপার্জন। ঘরে ফিরে, খেতে নেমে পড়বেন তাঁরা।

ওই শ্রমিকদের সমস্যা সম্প্রতি জানতে পারেন ঝাড়খণ্ডের লোহারডাঙা জেলার ডালসার সচিব। তিনি ই-মেল করে বিষয়টি জানান হুগলির ডালসার সচিবকে। ওই শ্রমিকেরা যে এজেন্ট মারফত এখানে এসেছিলেন, গত ২৪ জুলাই তাঁকে হুগলির ডালসার কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি জানান, মজুরি মেলেনি, এমন ২২ জন শ্রমিক ওই ভাটায় রয়েছেন। কয়েক জনের সঙ্গে তাঁদের ছোট ছোট সন্তানও রয়েছে। সেই মতো পুলিশ মারফত ভাটা মালিককে নোটিস পাঠানো হয় ডালসার তরফে।

এক দিন পরেই দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ডালসার সচিব শর্মিষ্ঠা ঘোষ। সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী মানস সাঁতরা। ডালসা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাটা মালিক সেখানে মেনে নেন, তিনি পুরো মজুরি মেটাননি। ওই টাকা মেটানোর জন্য তিনি কিছু সময় চান। কারও পাওনা ছিল ৬১ হাজার টাকা। কারও ৪২ হাজার, কারও ৯ হাজার, কারও আবার ৫৬ হাজার বা ২৩ হাজার টাকা বকেয়া ছিল।

শ্রমিকেরা জানান, একে তো মজুরি পাচ্ছেন না। তার উপরে ঝাড়খণ্ডে ফিরতে না পাকায় চাষ করার উপায় নেই। ফলে রোজগার বন্ধ। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ৪ অগস্ট অর্থাৎ গত শুক্রবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন দু’পক্ষ ফের হাজির হন। সে দিনই ডালসা কার্যালয়ে বসে ওই শ্রমিকদের পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দেন ভাটা মালিক। সব মিলিয়ে ২২ জন শ্রমিকের পাওনা বাবদ ৬ লক্ষ ১১ হাজার টাকা ভাটা মালিক মিটিয়েছেন বলে ডালসার তরফে জানানো হয়েছে।

পরিযায়ী শ্রমিকদের বঞ্চনা ঘোচাতে গত কয়েক বছর ধরে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইন সহায়তা কেন্দ্র। এই ঘটনায় ডালসার ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তবে, তাঁর বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিকের হিসাব রাজ্যের শ্রম দফতরে থাকা উচিত। মধ্যস্থতা করে শ্রমিককে সাহায্যের কথা তাদেরই। কিন্তু, সেই ব্যবস্থাই কার্যত নেই। কোনও ভাবে বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ হতে পারায় ওই শ্রমিকেরা সুরাহা পেলেন। নানা অসুবিধার সম্মুখীন হলেও সিংহ ভাগ শ্রমিকই নির্দিষ্ট দফতর পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Labours Jharkhand Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE