Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Rape victim

Rape victim: টাকা নেই, ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবার

আইন বিভাগ সূত্রের খবর, বিচারকের নির্দেশের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানাতে হয় মহকুমা আইনি পরিষেবা সংস্থায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২২ ০৯:২১
Share: Save:

নির্দেশ ছিল, এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণের ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু চার মাস পার। উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের ‘পকসো’ বিচারকের ওই নির্দেশ সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণ পেল না হাওড়ার এক ‘ধর্ষিতা’ নাবালিকার পরিবার।

কারা দেয় ক্ষতিপূরণ?

রাজ্য আইন বিভাগ সূত্রের খবর, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ‘সালসা’ বা স্টেট লিগ্যাল এইড সার্ভিস অথরিটি-র। সালসা-র দাবি, রাজ্য সরকার তাদের হাতে এ বাবদ মোট ৮ কোটি টাকা দিয়েছে। ওই বরাদ্দে রাজ্য জুড়ে যত ক্ষতিপূরণপ্রাপক আছেন, তাঁদের সবাইকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়। আরও টাকা রাজ্য সরকারের কাছে চাওয়া হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলে সকলেই ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন।

এ বার রাজ্যে দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি অনুদান বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনায় সরব হয়েছেন। আরও নানা মহল থেকেও প্রশ্ন উঠছে।

ক্ষতিপূরণ না পেয়ে হতাশ নাবালিকার পরিবার। নাবালিকার হয়ে যে আত্মীয় ক্ষতিপূরণের জন্য পকসো আদালতের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন, তিনি বলেন, ‘‘ধর্ষণের ফলে নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। সে সন্তান প্রসব করেছে। সন্তানের দেখভাল করার ক্ষেত্রে আমরা বেশ আর্থিক সঙ্কটে পড়েছি। নাবালিকাও মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ওর চিকিৎসা দরকার। টাকাটা পেলে উপকার হত।’’ নাবালিকার আইনজীবী দেবযানী সেনাপতি বলেন, ‘‘ওই নাবালিকার পরিবার খুব গরিব। টাকা না-পাওয়ায় তারা খুব সমস্যায়দিন কাটাচ্ছে।’’

উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের বিচারাধীন ওই ধর্ষণ মামলায় বিচারক ৫০ হাজার টাকার অন্তর্বতীকালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন গত ২২ এপ্রিল। পকসো মামলায় ধর্ষিতার পরিবারকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আইন চালু হয় ২০১৮-তে। আইনে আরও বলা হয়, মামলা চলাকালীন ধর্ষিতার পরিবারকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্য‌ন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পরে আদালত ধর্ষিতার পরিবারকে যখন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেবেন, তখন অন্তর্বতীকালীন ক্ষতিপূরণের টাকা বাদ দেওয়া হবে। সেই আইন মেনেই উলুবেড়িয়ার পকসো আদালতে নাবালিকার পরিবারের জন্য অন্তর্বতীকালীন ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছিলেন তাদের এক আত্মীয়।

ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পদ্ধতি কী?

আইন বিভাগ সূত্রের খবর, বিচারকের নির্দেশের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানাতে হয় মহকুমা আইনি পরিষেবা সংস্থায়। ওই সংস্থাই যাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ হয়েছে, তার নাম-ঠিকানা এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর নিয়ে জেলা আইনি পরিষেবা সংস্থা (ডালসা)-র মাধ্যমে পাঠায় সালসা-র কাছে। সালসা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা পাঠিয়ে দেয়।

উলুবেড়িয়া মহকুমা আইনি পরিষেবা সংস্থা থেকে জানানো হয়, তারা ওই নাবালিকার বিস্তারিত বিবরণ এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ডালসা-র মাধ্যমে সালসা-র কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।

নাবালিকার আইনজীবী বলেন, ‘‘অন্য দু’টি ধর্ষণের মামলাতেও এক ধর্ষিতাকে তিন লক্ষ টাকা এবং আর এক ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণের চূড়ান্ত রায় হয়েছে ২০২১ সালে। সেই টাকাও তাঁরা হাতে পাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape victim compensation Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE