বন্যার পর হাল ফেরেনি বন্দর বাস স্ট্যান্ডের। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
বর্ষা এলেই বুক কাঁপে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের। বন্যায় শস্য়-সম্পত্তি এবং জীবনহানির ঘটনা যেন প্রতি বছরের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই খানাকুল-২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের দাবি, বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান। কিন্তু সেই দাবি মেটা তো দূর, বছর বছর বন্যার ক্ষতেরই অধিকাংশ মেরামত হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ২০২১ সালের বন্যার পর এখনও পুরো ব্লক এলাকাই বিধ্বস্ত। বিষয়টি নিয়ে ধান্যগোড়ি, জগৎপুর, মাড়োখানা, নতিবপুর-১ ও ২, পলাশপাই-১ ও ২ অঞ্চলের বাসিন্দারা ফুঁসছেন।
এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাওয়া জন প্রতিনিধিরা প্রচারের বিষয়বস্তু নিয়ে দিশেহারা। দিশেহারা দলের নেতারাও। খানাকুল-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ১৪ সংসদের প্রার্থী তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ হরিদাস চড়চড়ি সাফ জানালেন, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে বলার মতো কিছুই পাচ্ছি না। আপাতত দলের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং কেন্দ্রের তরফে ১০০ দিন ও আবাস যোজনায় বঞ্চনার কথাই বলছি।”
২০২১ সালে বন্যায় খানাকুল-২ ব্লকের মূল প্রাণকেন্দ্র বন্দর বাসস্ট্যান্ড, বাজার-সহ পুরো অঞ্চল তছনছ হয়ে গিয়েছে। এখনও তার সংস্কার হয়নি। কেন কাজ হল না, তা নিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল নেতা দিলীপ সানকি।
ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের বন্দরের বিপ্লব সামন্ত, জগৎপুর পঞ্চায়েতের নন্দনপুরের সুবীর মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘কিছু নদনদীর বাঁধে মাটি পড়া ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ হয়নি। এখানে বন্যা মোকাবিলার উপযুক্ত ব্যবস্থা করার দাবি প্রতি ভোটের আগে জানানো হয়। কিন্তু তা মেটে কই।’’ মাড়োখানা পঞ্চায়েতের বনহিজলির শেখ সুলেমনের অভিযোগ, ‘‘বিভিন্ন নদনদী এবং তাদের শাখা খালগুলির উপর বাঁশের বদলে পাকা সাঁকো করতে হবে। অলিগলিতে অযথা কংক্রিটের রাস্তা না করে মূল রাস্তায় ওঠার যোগাযোগের পথগুলো সংস্কার করা দরকার।’’
প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখনও বিশেষ সুরাহা না মিললেও, একেবারে যে কাজ হয়নি তা নয়। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় দামোদর নদের শাখা মুণ্ডেশ্বরী নদীর পলি উত্তোলন, দামোদরের পাড় বাঁধাই, দুই নদনদীর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন খাল সংস্কারের কাজ গত বছর আড়াই ধরে চলছে। আবার ব্লকের পশ্চিম সীমানায় দ্বারকেশ্বর এবং দক্ষিণে রূপনারায়ণ নদেরও বেশ কিছু বাঁধ সংস্কার হয়েছে। প্রশাসনের মতে, অবস্থানগত কারণে খানাকুল-২ ব্লকে বন্যা বন্ধ করা না গেলেও বর্তমানে যে সব কাজ চলছে তাতে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy