দূরত্ববিধি শিকেয়, মাস্কও নেই কারও মুখে। বুধবার উলুবেড়িয়ার কালীবাড়ি ঘাটে। ছবি: সুব্রত জানা।
লক্ষ্যপূরণ হল না।
সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে হাওড়া জেলায় সকলকে করোনার প্রথম ডোজ় দেওয়ার লক্ষ্যমাত্র নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু মাস শেষে দেখা গেল, এখনও পর্যন্ত ৮০ শতাংশ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। আর টিকার দু’টি ডোজ়ই পেয়েছেন জেলার ৬০ শতাংশ বাসিন্দা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাধা হিসেবে টিকার জোগানের অভাবকেই দুষেছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘টিকা দেওয়ার সব ব্যবস্থা আমরা করে রেখেছি। কিন্তু টিকার যথাযথ জোগান না থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখা যাচ্ছে না।’’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে সকলেই টিকার প্রথম ডোজ় পেয়ে যাবেন।
জেলায় দৈনিক করোনা সংক্রমণ এখনও শূন্যে আসেনি। গড়ে দৈনিক ৪০ জন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। তবে সুস্থতার হার বেড়েছে ও মৃত্যুর হার কমেছে বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। জেলায় মৃত্যুহার দেড় শতাংশ জানিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘এটা এখনও পর্যন্ত সারা বছরের গড়। সাম্প্রতিক মৃত্যুর হার দেখলে তা দেড় শতাংশের কমই হবে।’’ তবে এই পরিসংখ্যানে কোনও আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই বলেই দাবি চিকিৎসকদের। মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মেনে চলা, বারবার হাত ধোওয়ার উপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও করোনা-বিধি মানার ক্ষেত্রে জেলার মানুষের মধ্যে অসচেতনতার ছবিই বারবার সামনে আসছে। সম্প্রতি উদয়নারায়ণপুর ও আমতা-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি হয়। এলাকার বহু মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরগুলিতে। সেখানে করোনা-বিধি পুরোপুরি মানা হচ্ছে না বলে মেনে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একটা বড় অংশ। পুজোর আগে কেনাকাটার সময়েও অনেকেই মাস্ক পরেননি। আর দূরত্ব-বিধি তো শিকেয়। তাছাড়া লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় মানুষ ভিড় বাসে চেপে যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছেন। যাত্রীদের একটা বড় অংশের মধ্যেই করোনা-বিধি মানার কোনও লক্ষণই নেই।
এমন অনিয়ম চলতে থাকলে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে অনেকেই আক্রান্ত হতে পারেন বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা। উলুবেড়িয়ার বিশিষ্ট চিকিৎসক সুশান্ত মাইতি বলেন, ‘‘টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও করোনা বিধি শিথিল করা যাবে না। মাস্ককে সর্বক্ষণের সঙ্গী করতে হবে। দূরত্ব-বিধি মেনে চলতেই হবে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এ বিষয়ে প্রশাসনের আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘বারবার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নিজে সচেতন না হলে কী আর করা যাবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy