Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Dangers of Kite Threads

ঘুড়ির সুতোয় প্রায় বিচ্ছিন্ন স্কুটার আরোহীর আঙুল

জখম পার্থ বৈরাগীর বাড়ি শ্রীরামপুরের পটুয়াপাড়ায়। তিনি শ্রীরামপুর স্টেশনের ধারে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মী। ওই সেন্টার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৪টে নাগাদ পার্থ বৈদ্যবাটীতে যাচ্ছিলেন এক জনের রক্ত সংগ্রহের জন্য।

যখম যুবক। নিজস্ব চিত্র।

যখম যুবক। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩২
Share: Save:

ঘুড়ির সুতোয় ডান হাতের কড়ে আঙুল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল এক স্কুটার আরোহীর। এমন ভাবে আঙুলটি কেটেছে, সেটি জোড়া লাগানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির শ্রীরামপুর উড়ালপুলে। ওই জায়গা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা মোটরবাইক আরোহীদের দাবি, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সাধারণ মাঞ্জাও নয়। চিনা মাঞ্জার ক্ষুরধার সুতোয় রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। অথচ পুলিশ, প্রশাসন বা পুরসভা নির্বিকার।

এ দিনের ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে। বেহিসেবি আনন্দের জন্য কেন নিরীহ মানুষকে খেসারত দিতে হবে, প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্নে পথ-সুরক্ষাও। পুর-কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ জানিয়েছে, আচমকা সুতো যাতে বাইক বা সাইকেল আরোহীর সামনে এসে পড়তে না পারে, তার জন্য উড়ালপুলের দু’ ধারে উঁচু করে রেলিং বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

জখম পার্থ বৈরাগীর বাড়ি শ্রীরামপুরের পটুয়াপাড়ায়। তিনি শ্রীরামপুর স্টেশনের ধারে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মী। ওই সেন্টার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৪টে নাগাদ পার্থ বৈদ্যবাটীতে যাচ্ছিলেন এক জনের রক্ত সংগ্রহের জন্য। তখনই আচমকা ওই সুতো এসে তাঁর ডান হাতের আঙুল ফালাফালা করে দেয়। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। তার পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তরফে জানানো হয়, এসএসকেএমের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে পার্থকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে আঙুলটি এমন ভাবে কেটেছে, তাতে জোড়া লাগানো সম্ভব কি না, লাগানো গেলেও কর্মক্ষম থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে। ওই বিপত্তি চিনা মাঞ্জার কারণেই বলে মনে করা হচ্ছে।

বাইক আরোহীদের ক্ষোভ, উড়ালপুল লাগোয়া আবাসনের ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। হঠাৎ নেমে আসা সুতো প্রায়ই বিপদের সামনে ফেলে দেয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। তাঁদের দাবি, চিনা মাঞ্জা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। উড়ালপুলের দু’পাশের বাড়ি বা আবাসন থেকে ঘুড়ি ওড়ানো বন্ধ করা হোক। কলকাতার ‘মা’ উড়ালপুলের কায়দায় এখানেও উড়ালপুলের দু’ধারে উঁচু রেলিং অর্থাৎ ফেন্সিং করে দেওয়া হোক, যাতে বাইক বা সাইকেল আরোহীরা সমস্যায় না পড়েন।

মাস দেড়েক আগে ওই উড়ালপুল দিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার সময় সুকেশ সাহা নামে এক বাইক আরোহী ঘুড়ির ধারালো সুতোয় ঘায়েল হন। তাঁর গলা কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। ক্ষতস্থানে চারটি সেলাই পড়ে। অমিতাভ দে নামে এক যুবক বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে উড়ালপুলে আচমকা চিনা মাঞ্জা আমার সামনে চলে আসে। কপাল ভাল বুকে আটকায়। গলায় পড়লে যা-তা কাণ্ড হত। চিনা মাঞ্জা খুবই বিপজ্জনক।’’ রেললাইনের উপরে জিটি রোডের ওই উড়ালপুল সদাব্যস্ত।

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিকের দাবি, গত বছর খানেকের মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে চিনা মাঞ্জা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই সুতো কোথাও বিক্রির খবর পেলে বাজেয়াপ্ত করা হবে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘ঘুড়ির সুতো থেকে বাঁচতে উড়ালপুলের দু’পাশে উঁচু রেলিং বসানো নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ফের কথা বলব।’’ পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE