Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Runa Khatun On Manoranjan Byapari

সুর নরম রুনার, আসেননি বিধায়ক

রুনা এবং তাঁর স্বামী তথা সিজা কামালপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরিজিৎ দাসের সঙ্গে মনোরঞ্জনের বিরোধ খোলাখুলি ভাবে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে দিন কয়েক ধরে।

তৃণমূলের যুবনেত্রী রুনা খাতুন।

তৃণমূলের যুবনেত্রী রুনা খাতুন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫০
Share: Save:

জরুরি বৈঠক সেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বলাগড়ের দলীয় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে বয়কটের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তৃণমূলের যুবনেত্রী রুনা খাতুন। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাঁর সুর কিছুটা নরম। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে বিধায়ককে বয়কটের কথা দলের কর্মীরাই বলেছিলেন। কর্মীরা যদি বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন, তাতে আমাদের কিছু করার নেই।’’

ঘটনাচক্রে বিধায়কও এ দিন দলে তাঁর ‘বিরোধীদের’ সম্পর্কে কড়া মন্তব্য থেকে বিরত থেকেছেন। বিধায়কের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘বলাগড়ে না গিয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।’’ বুধবার রাতে জিরাটে বিধায়ক-কার্যালয় ভাঙচুরের পরে ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, এ বার তাঁর ‘পাল্টা দেওয়ার সময়’। তিনি বলাগড়ে আসছেন। এ বার ‘খেলা জমে যাবে’। পরে সেই পোস্ট তুলে নেন। শুক্রবার পর্যন্ত তিনি
বলাগড়ে আসেননি।

রুনা এবং তাঁর স্বামী তথা সিজা কামালপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরিজিৎ দাসের সঙ্গে মনোরঞ্জনের বিরোধ খোলাখুলি ভাবে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে দিন কয়েক ধরে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা মন্তব্য শুধু নয়, অনৈতিক কাজের অভিযোগও করেন। রুনা সম্পর্কে খারাপ শব্দ প্রয়োগ করেছেন বিধায়ক, এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে
পরিস্থিতি তপ্ত হয়। মনোরঞ্জন ওই পোস্ট তুলে নিলেও এবং ওই শব্দ প্রয়োগের জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও বিতর্ক থামেনি। এর পরেই বিধায়কের কার্যালয় ভাঙচুর হয়। বিধায়ক সরাসরি হামলার অভিযোগ তোলেন রুনা-অরিজিতের বিরুদ্ধে। যদিও এ নিয়ে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ বিধায়ক করেননি। বিধায়কের মন্তব্য নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন রুনা। শনিবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে রুনা বলেন, ‘‘সব কিছুর পরে দল এক সঙ্গে চলার বার্তা দিলে, তখন ভেবে দেখব।’’

সামগ্রিক পরিস্থিতিতে দলের দুই শিবিরের ‘লড়াই’তে তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়েন। দলের সাধারণ কর্মীদের একাংশও গোটা বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত। এই অবস্থায় বিবদমান দুই গোষ্ঠীর খানিক ‘নরম অবস্থান’ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ডুমুরদহ ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা দলের পুরনো নেতাদের অন্যতম শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহিলা সম্পর্কে বিধায়ক ঠিক কথা বলেননি। তবে, ওঁর (বিধায়ক) সমালোচনা করা আমার উচিত নয়। দলের স্বার্থে সমাজমাধ্যম থেকে বিরত থাকতে হবে। সকলকে জোটবদ্ধ হয়ে লোকসভা ভোটে লড়তে হবে।’’ বিধায়ককে নিয়ে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে শুক্রবারের বৈঠকে শ্যামাপ্রসাদও ছিলেন।

গোলমালের আশঙ্কায় বৃহস্পতি এবং শুক্রবার বিধায়ক কার্যালয় চত্বরে পুলিশের মোতায়েন ছিল। এ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তোলেন। শনিবার ওই চত্বরে পুলিশের পাহারা ছিল না। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের মূলে রয়েছে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গোলমাল। সামগ্রিক বিষয়ে এ দিনও মন্তব্য এড়িয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি যথারীতি বলেন, ‘‘দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বিষয়টি দেখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Runa Khatun Manoranjan Byapari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE