দামোদরের গ্রাসে বসতবাড়ি। ছোট কলিকাতা গ্রামে রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি।
প্রতি বছরই বর্ষায় ভাঙনে নিয়ম করে দু’পাড় ভাঙে দামোদরের। তাই বর্ষা শুরু হলে দুর্দশাও শুরু হয়ে যায় হাওড়ার আমতা ১ নম্বর ব্লকের রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোট কলিকাতা, রসপুর ইত্যাদি গ্রামগুলিতে। ১০ বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও ভাঙন আটকাতে আজ পর্যন্ত পাকাপাকি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন, এমনটাই অভিযোগ ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
ভাঙনের ফলে দামোদরের গর্ভে চলে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি। তলিয়ে গিয়েছে বাড়িঘর। কিন্তু কী ভাবে ভাঙন আটকানো যায় তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও পাতাপাকি পরিকল্পনা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। কয়েক বছর আগে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে বেশ কিছু জায়গায় কংক্রিটের স্ল্যাব বসিয়ে পাড় মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু জলের তোড়ে সে সবই ভেসে গিয়ে পাড়ের অবস্থা ফের আগের মতোই হয়ে গিয়েছে। ভাঙনে ছোট কলিকাতা ও রসপুর গ্রামের প্রায় দেড়শো পাকা বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায়। ছোট কলিকাতা ফেরিঘাট থেকে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়ছে। বেশ কিছু বাড়ি প্রায় নদীর উপরে ঝুলছে। পাড়ের নীচের অংশের মাটি ক্ষয়ে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনও সময় বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিন গুনছেন মানুষ। অথচ সেচ দফতর বা জেলা প্রশাসনের কোনও নজরই নেই বলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা অর্ধেন্দু নেবু, কুন্তল মণ্ডল বলেন, “১০ বছর ধরে এখানে দামোদরের ব্যাপক ভাঙন হচ্ছে। সেচ দফতর বা প্রশাসন সব জানা সত্ত্বেও ভাঙন আটকাতে কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়নি। বছর পাঁচেক আগে কংক্রিটের স্ল্যাব বসিয়ে নদীর পাড় মেরামত করা হলেও তা জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে প্রতি মুহূর্তে বিপদ মাথায় নিয়ে দিন কাটছে।” তাঁদের দাবি, নাম কা ওয়াস্তে নয়, ভাঙন আটকাতে পাকাপাকি ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, ডিভিসি জল ছাড়লেও প্রচন্ড স্রোতে ভাঙন আরও বাড়ে। ফলে এলাকা প্লাবিত হয়।
রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্লে বলেন, “এই এলাকায় ভাঙন আটকাতে পাড় মেরামতের ব্যাপারে আমি সেচ দফতরকে জানিয়েছি। কাজ শীঘ্রই আরম্ভ হবে।” আমতা সেচ দফতরের সহকারি বাস্তুকার স্বপন দত্ত বলেন, “ছোট কলিকাতা, রসপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এসেছি। ভাঙন রোধে কী করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy