Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪

১১ কোটিতে চেহারা ফিরছে কানা দামোদরের

এক সময়ে যে নদী ছিল বোঝা যায়, ‘বনপলাশীর পদাবলী’ সিনেমা দেখলে। ভরা নদীতে ভাসছে নৌকা। দাঁড় টানছেন দু’জন মাঝি। ১৯৭৩ সালে সেলুলয়েডে তোলা সেই নদী এখন যেন খেলার মাঠ। অনেক জায়গাতেই নদী মুখ ঢেকেছে চরে।

সংস্কার: পানা সরিয়ে, পলি কেটে পুরনো চেহারায় ফেরানো হবে নদীকে। নিজস্ব চিত্র

সংস্কার: পানা সরিয়ে, পলি কেটে পুরনো চেহারায় ফেরানো হবে নদীকে। নিজস্ব চিত্র

নুরুল আবসার
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

এক সময়ে যে নদী ছিল বোঝা যায়, ‘বনপলাশীর পদাবলী’ সিনেমা দেখলে। ভরা নদীতে ভাসছে নৌকা। দাঁড় টানছেন দু’জন মাঝি।

১৯৭৩ সালে সেলুলয়েডে তোলা সেই নদী এখন যেন খেলার মাঠ। অনেক জায়গাতেই নদী মুখ ঢেকেছে চরে। জল যতটুকু আছে তাও ঢেকে গিয়েছে পানায়। মজে যাওয়া সেই কানা দামোদর সংস্কার করে আগের চেহারার ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে সেচ দফতর। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১১ কোটি টাকা। হাওড়ার জগৎবল্লভপুর ব্লকের তেলিহাটি থেকে শুরু করে গোবিন্দপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছে সেচ দফতর। টেন্ডারের কাজ শেষ। কাজ শুরু হবে এপ্রিল মাল থেকে।

বহুবছর আগে কানা দামোদর মূল দামোদরেরই একটি শাখা হিসাবে বিবেচিত হত। বর্ধমানের জামালপুরের কাছে মূল দামোদর থেকে কানা দামোদর বেরিয়ে এসেছিল। তারপরে হুগলি হয়ে হাওড়ায় ঢোকে কানা দামোদর। পাঁচলায় এসে বাসুদেবপুরে রাজাপুর খালে মিশে যায়। রাজাপুর খাল আবার কানা দামোদরকে মিশিয়ে দেয় উলুবেড়িয়ায় হুগলি নদীতে।

বর্তমানে মূল দামোদরের সঙ্গে কানা দামোদরের সরাসরি যোগ নেই। কারণ মূল দামোদর অনেকটা সরে যাওয়ায় ডিভিসি তৈরি করে ইডেন চ্যানেল। এই খা‌লের মাধ্যমে ডিভিসির ছাড়া জল এসে কানা দামোদরে পড়ে। কানা দামোদরের ১৫ কিলোমিটার অংশ বর্ধমানে, ৪৫ কিলোমিটার অংশ হুগলিতে ও ২৯ কিলোমিটার অংশ আছে হাওড়ায়। তার মধ্যে তেলিহাটি থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার অংশ মজে গিয়েছে। সেই অংশটুকুই সংস্কার করা হচ্ছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। এই অংশটি মজে যাওয়ার ফলে ডিভিসি জল ছাড়লে জগৎবল্লভপুর এবং পাঁচলা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। ২০১৫ সালে অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসি অতিরিক্ত জল ছাড়ায় শোচনীয় অবস্থা হয়েছিল ওই সব এলাকার। কানা দামোদরের বাঁধ উপছে প্লাবিত হয়েছিল জগৎবল্লভপুর, পাঁচ‌লা ও আমতা ১ ব্লকের বহু গ্রাম।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ১৭ কিলোমিটার অংশে নদী সংস্কার করা হলে একদিকে যেমন বন্যার সমস্যা কাটবে, তেমনই বোরো মরসুমে চাষিরাও উপকৃত হবেন। শুধু নদীর বুক থেকে পলি তুলে ফেলাই নয়, ১৩টি স্লুইস গেট ন‌তুন করে তৈরি করা হবে। বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দারা নদী পারাপার করার জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। সেগুলির বদলে চারটি কাঠের সেতু তৈরি হবে। তৈরি হবে বাঁধের গায়ে নতুন রাস্তা, যাতে নিয়মিত বাঁধের অবস্থা সেচ দফতর পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

সব মিলিয়ে তেলিহাটি থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত মজে যাওয়া কানা দামোদর ফের ফিরে পেতে চলেছে পুরনো চেহারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Damodar Cleaning Of Damodar Renovation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE