Advertisement
০১ মে ২০২৪

গুপ্তিপাড়ায় পর্যটন, ভাবনা প্রশাসনে

সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে হালে পানি পায়নি হুগল‌ির প্রত্যন্ত জনপদ গুপ্তিপাড়া। কয়েক বছর ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীরা রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে‌ন গঙ্গা তীরবর্তী এই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে।

ঐতিহাসিক: গুপ্তিপাড়ার প্রাচীন বৃন্দবন চন্দ্র’র মন্দির। নিজস্ব চিত্র

ঐতিহাসিক: গুপ্তিপাড়ার প্রাচীন বৃন্দবন চন্দ্র’র মন্দির। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল
গুপ্তিপাড়া শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০২
Share: Save:

সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে হালে পানি পায়নি হুগল‌ির প্রত্যন্ত জনপদ গুপ্তিপাড়া। কয়েক বছর ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীরা রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে‌ন গঙ্গা তীরবর্তী এই এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে নড়াচড়া শুরু হয়েছে প্রশাসনিক দফতরে।

কয়েক মাস আগে সংসদে বিষয়টি তুল ধরেন স্থানীয় সাংসদ রত্না দে নাগ। রবিবার গুপ্তিপাড়া ঘুরে যান সাংসদ তথা কেন্দ্রের পর্যটন ও সাংস্কৃতিক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মুকুল রায়। তার পরেই সোমবার পরিকাঠামো গড়ে তোলার খুঁটিনাটি নিয়ে চুঁচুড়ায় বৈঠক করলেন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল।

প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে রাজ্যের পর্যটন দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হুগলি জেল‌া প্রশাসনের কাছে গুপ্তিপাড়ার পর্যটন কেন্দ্র গড়া নিয়ে তথ্য তলব করেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়। সোমবারের বৈঠকে জেলাশাসক বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা থেকে যানবাহনের সুবিধা, সৌন্দর্যায়ন, পানীয় জল, আলো, অতিথিশা‌‌ল‌া তৈরি ইত্যাদির পাশাপাশি বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের অধীনে থাকা একটি দিঘি সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হবে। মঠের পিছনের মাঠে ‘ইকো-ট্যুরিজম পার্ক’-এর আদলে পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা করার প্রস্তাবও থাকবে। অতিথি আবাসের জন্য ইতিমধ্যেই ৯০ শতক সরকারি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।

বিডিও (বলাগড়) মোদাশ্বর মোল্লা জানান, শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে।

গুপ্তিপাড়া সংস্কৃত চর্চার অন্যতম সেরা পীঠস্থান ছিল। বাংলার প্রথম বারোয়ারি পুজো এখানেই হয়। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের আওতায় থাকা বৃ‌ন্দাবনচন্দ্র মঠের চৌহদ্দিতে একলপ্তে বৃন্দাবনচন্দ্র, রামসীতা, কৃষ্ণচন্দ্র এবং গৌরনিতাই মন্দির রয়েছে। বৃন্দাবনচন্দ্র এবং কৃষ্ণচন্দ্রের মন্দির আটচালার। রামচন্দ্রের মন্দির একচালা শৈলীর। তাতে পোড়ামাটির ফলক রয়েছে। এখানকার বিখ্যাত রথযাত্রা কয়েকশো বছরের পুরনো। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে গঠিত ‘গুপ্তিপাড়া পর্যটন উন্নয়ন কমিটি’র সদস্যদের দাবি, মুকুলবাবু আশ্বাস দিয়েছেন, বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়ন নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রীর কাছে দরবার করবেন। সামগ্রিক পরিকাঠামো নিয়ে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা ব‌লবেন। সাংসদও ফের সংসদে বিষয়টি তুলবেন ব‌লে আশ্বাস দিয়েছেন। কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, ‘‘পর্যটনের সঠিক পরিকাঠামো তৈরি হলে এখানকার আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো আমুল বদলে যাবে।’’

গুপ্তিপাড়ায় সারা বছর দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক আসেন। কিন্তু সূর্য ডুবলেই অন্ধকারে ঢেকে যায় গোটা এলাকা। পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থাও কার্যত নেই। সরকারি পরিকাঠামোয় অতিথিশালা, আলোর সুবন্দোবস্ত হলে পর্যটকরা আকৃষ্ট হবেন। এর পাশাপাশি, আধুনিক মানের বাসস্ট্যান্ড তৈরির দাবিও রয়েছে।

সরকারি উদ্যোগে এ সব দ্রুত হোক, এটাই চায় গুপ্তিপাড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Administration Tourist spot Guptipara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE